ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌর নির্বাচন

মোরেলগঞ্জে হবে আ’লীগ-বিএনপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

সরদার ইনজামামুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
মোরেলগঞ্জে হবে আ’লীগ-বিএনপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাগেরহাট: বাগেরহাটের বৃহত্তম উপজেলা মোরেলগঞ্জ। প্রায় দেড় যুগ আগে উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত হয় মোরেলগঞ্জ পৌরসভা।

কিন্তু নানা সংকটে আজও পুরোপুরি নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত হয়নি এখানকার পৌরবাসীর।

পৌর নির্বাচনকে ঘিরে মোরেলগঞ্জের সড়কগুলোতে শোভা পাচ্ছে মেয়র ও কাউন্সিলরদের পোস্টার। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে শেষ মুহূর্তেও প্রচারণায় ব্যস্ত এখানকার প্রার্থী ও তাদের  সমর্থকরা। দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছেন এখানকার ভোটাররা।

মেয়র পদে মোরেলগঞ্জে প্রার্থী তিনজন। আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান মেয়র মনিরুল হক তালুকদার, বিএনপির আব্দুল মজিদ জব্বার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির উপজেলা আহ্বায়ক সোমনাথ দে।

ইতোপূর্বে সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে পরাজয়ের পর এবার পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় সোমনাথ দেকে নিয়ে আলোচনা থাকলেও ভোটের মাঠে অনেকটাই পিছিয়ে আছেন তিনি। তাই এখানে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে আশা ভোটারদের।

নদী তীরে অবস্থিত এ পৌরসভাটির প্রধান সমস্যা পানি। খরস্রোতা নদী পানগুছি পৌরসভাটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে  বড় সমস্যা রয়েছে। গভীর নলকূপ কার্যকর না হওয়ায় এবং ভূ-উপরস্থ পানির পর্যাপ্ত উৎস না থাকায় সুপেয় পানিরও তীব্র সংকট এখানে।

অন্যদিকে পানগুছি নদী ও সংলগ্ন বারুইখালি খালে বেড়িবাঁধ না থাকায় বর্ষা মৌসুমে জোয়ার ভাটায় পৌর শহর প্লাবিত হয়ে সৃষ্টি হয় জনভোগান্তির। এসব সমস্যা সমাধান না হওয়া এবং ড্রেন, সড়ক বাতিসহ নানা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত এ পৌরবাসী।

মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার মো. সালাউদ্দিন জানান, পানগুছি নদীর ওপারে রাস্তা-ঘাট একটু ভালো হলেও এপারের অবস্থা খুবই খারাপ। পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তা এখনও মাটির। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার রাস্তারও বেহাল অবস্থা।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার রশিদা খাতুন, আব্দুল হালিম, খাদিজা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকতে হয় আমাদের। পৌরসভায় থেকেও নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা।

পানি নিয়ে দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে এখনকার ভোটাররা বলেছেন, মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মানুষের কাছে রাস্তা-ঘাট, ড্রেন বা সড়ক বাতির থেকেও বড় সমস্যা পানি। আমরা এমন মেয়র চাই যার দ্বারা আমাদের এ সংকট দূর করা সম্ভব হবে।

এদিকে, আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারণায় বাধা, প্রচার মাইক ভাঙচুর ও কর্মীদের মারধরের অভিযোগ করেছেন বিএনপি দলীয় প্রার্থী আব্দুল মজিদ জব্বার।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মনিরুল হক তালুকদার বলেছেন, নির্বাচনে পরাজয় বুঝে বিএনপি দলীয় প্রার্থী নিজের দুর্বলতা ঢাকতে এ সব অভিযোগ করছেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও এ পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৪৫ জন। এর মধ্যে ৭ হাজার ৪৬৩ জন পুরুষ এবং ৬ হাজার ৮৮২ জন নারী। এখানে ভোটকেন্দ্র রয়েছে নয়টি।

আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেওয়া ও প্রচারযন্ত্র ভাঙচুর বিষয়ে বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমান বলেন, বিএনপি দলীয় প্রার্থীর অভিযোগ তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্যা বলেন, বাগেরহাটের দু’টি পৌরসভায় দু’য়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের দিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ভোট কেন্দ্রসহ আশপাশে টহল দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।