ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর বর্জনে দাগনভূঞাঁ পৌরসভা নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর বর্জনে দাগনভূঞাঁ পৌরসভা নির্বাচন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফেনী: উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, হামলা, পাল্টা হামলার আর ককটেল বিস্ফোরণের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে ফেনীর  দাগনভূঞাঁ পৌরসভা নির্বাচন।

তবে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাইফুর রহমান স্বপন নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।



বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে যথারীতি পৌর নির্বাচনের ভোট উৎসব শুরু হয়।
 
সকালে পৌরসভার আলাইয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কামাল আতাতুর্ক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি  কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটাররা সারিবদ্ধ হয়ে ভোট দিয়েছে। বিরাজ করছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।

বেলা ১০টার দিকে করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে লাঞ্ছিত হয় ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপির প্রার্থী সাইফুর রহমান স্বপন। এরপর থেকে শুরু হয় হামলা পাল্টাহামলা আর ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা।

জাল ভোট দিতে এসে দাগনভূঞা একাডেমি কেন্দ্রে ৬ জন নারী, ৪ পুরুষ, করিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ যুবক, কামাল আতাতুর্ক হাই স্কুল কেন্দ্রে ২ যুবকসহ ১৩ জনকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় অবিস্ফোরিত ককটেল।

বেলা দেড়টার দিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাইফুর রহমান স্বপন নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবি জানান। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দলীয় প্রার্থী বহিরাগতদের দিয়ে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছেন এবং তার সমর্থকরা তাকে মারধর করে আহত করেন।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশ প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিলেও তারা তা আমলে নেয়নি।

অপরদিকে কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ফেনী পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত একমাত্র কাউন্সিল প্রার্থী নুর ইসলাম (ডালিম প্রতীক) ভোট বর্জন করেছেন।

এসময় তিনি ওই পৌরসভার পুন:তফসিল ঘোষণার দাবি জানান।

নুর ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে ওই ওয়ার্ডের দু’টি কেন্দ্র দখল করে জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মেরেছে সরকার দলীয় প্রার্থী কাউন্সিলর মনির আহাম্মদের (উটপাখি) সমর্থকরা। একই রাতে তার রান্না ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

সকাল থেকে ভোটারদের হুমকি-ধমকি দিয়ে ভোট কেন্দ্রে আসতে বাধা দেয়।
 
এসব অভিযোগ এনে বুধবার দুপুরে ভোট বর্জন করে পুন:তফসিলের দাবি জানান তিনি।

এ ওয়ার্ডে দু’টি কেন্দ্রে প্রায় ৩ হাজার ৩শ’ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা ছিল।

এ পৌরসভায় বাকি ২৩ কাউন্সিলর ও মেয়র বিনাভোটে নির্বাচিত হয়ে রয়েছেন। এ ওয়ার্ডেই নির্বাচন হচ্ছিল। তাই পুরো পৌরবাসীর নজর ছিল এ ওয়ার্ডের দিকে।

অন্য দুটি পৌরসভার মেয়রসহ ৪৭জন প্রতিনিধি বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় পুরো জেলার নজর ছিল দাগনভূঞাঁ পৌরসভার দিকে।

এ পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক ( নৌকা) ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী সাইফুর রহমান স্বপন (ধানের শীষ) নির্বাচন করেছেন।

কাউন্সিলর পদে ১৪ জনের মধ্যে এক নম্বর ওয়ার্ডে ওলি আহম্মদ (ঝাড়ু), আবদুল মজিদ (পানির বোতল), জাফর আহম্মদ (উট পাখি), ইউসুফ (টেবিল ল্যাম্প), মোহাম্মদ ইব্রাহীম (ব্রিজ), মোহাম্মদ ইমাম হোসেন (ডালিম), জাকের হোসেন (পাঞ্জাবি), মোস্তফা (ব্লাক বোর্ড), ফজলুল হক বাহাদুর (গাজর)।

তিন নম্বর ওয়ার্ডে আলী আহম্মদ (পাঞ্জাবি), নুরুল হুদা সেলিম (উট পাখি), জিয়া উদ্দিন ( টেবিল ল্যাম্প) ও সাত নম্বর ওয়ার্ডে জাফরুল ইসলাম (উট পাখি), কামরুল ইসলাম (পাঞ্জাবি) প্রতীক নিয়ে লড়েছেন।

বাকি ছয়টি ওয়ার্ড ও তিনটি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার পথে। এ পৌরসভায় মোট কেন্দ্র ১০টি, পুরুষ ভোটার ১০হাজার ২শ, নারী ভোটার ১০ হাজার ৩৪৭ জন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রিটার্নিং অফিসার ফরিদা খানম বাংলানিউজকে জানান, বিচ্ছিন্ন দু' একটি ঘটনা ছাড়া ভালো ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে নির্বাচন। অভিযোগ গুলো অমূলক। আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই ফলাফল ঘোষণা করা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।