ছোট পর্দার অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। ক্যারিয়ারে যখন সু-বাতাস বইছে, ঠিক তখনই শুটিং সেটে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
২০২৩ সালের ২৮ জানুয়ারি একটি নাটকের শুটিং করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বিস্ফোরণে দগ্ধ হন শারমিন আঁখি। তার শরীরের ৩৫ শতাংশ অংশ পুড়ে যায়। এরপর দুই মাস চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেন তিনি।
এর আগে ওই বছরের ২২ মার্চ সামাজিকমাধ্যমে এক পোস্টে যেদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেই দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে আঁখি তুলে ধরেছিলেন। তিনি এভাবে বলেছিলেন- যেদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম আমার দুই হাত-পা ডিপ বার্ন আর মুখ সুপার ফেসিয়াল বার্ন সঙ্গে শ্বাসনালিও আক্রান্ত ছিল। এতটাই খারাপ অবস্থায় ছিলাম, চিকিৎসক নিশ্চয়তা দিতে পারছিল না আমি ফিরে আসতে পারব কি না। যখন আইসিইউতে ছিলাম তখন বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা মাত্র ৩০ শতাংশ।
তবে ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন অগ্নিদগ্ধ সেই শারমিন আঁখি। রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সামাজিকমাধ্যমে নতুন একটি পোস্ট দিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
শারমিন আঁখি লেখেন, আগামী এক সপ্তাহ বাচ্চাদের কাছে যত কম ভিজিটর যাওয়া যায়, ততই মঙ্গল। প্রচুর ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকবে এই সময়টা। আগুনে পোড়ার পরবর্তী এফেক্ট হচ্ছে ইনফেকশন। চিকিৎসাধীন বাচ্চাগুলোকে বাঁচাতে চাইলে প্লিজ আবেগের বশবর্তী হয়ে এই মুহূর্তে তাদের দেখতে যাবেন না। আমাদের চামড়া জার্ম প্রটেক্ট করে। যেখানে চামড়ায় নেই, সেখানে প্রটেকশন একদম শূন্য লেভেলে। ইনফেকশনের কারণে বেশিরভাগ রোগী মারা যায়। পোড়ায় মরে না।
তিনি আরও বলেন, চামড়ার পোড়ার কষ্টের সঙ্গে অন্য কোনও যন্ত্রণার তুলনা করবেন না। উপরেরটা পোড়ায়, ভেতরটাও পোড়ায়। ড্রেসিংয়ের যন্ত্রণা আরও অসহ্যকর। নতুন চামড়া আসলেই সেই চামড়া ঘষে আবার উঠানো হয়। ট্রমা শুরু হবে আর দশ দিন পরে। এখন প্রতিটা বাচ্চা অনুভূতিশূন্য।
শারমিন আঁখি বলেন, এই মুহূর্তে একমাত্র ডাক্তার ছাড়া ওদের আশপাশে যত কম যাওয়া যায়, ততই ভালো। বাসায় ফেরার পর প্রত্যেকটা বাচ্চার মনোসামাজিক চিকিৎসা প্রয়োজন। আমি তিন মাস মনোসামাজিক চিকিৎসার শরণাপন্ন হয়েছিলাম। শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে মানসিক সুস্থতাটা অনেক জরুরি।
বলা দরকার, বর্তমানে শারমিন আঁখি চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে আছেন। মাঝে মাঝে তাকে কাজে পাওয়া যায়। তবে ওই ঘটনার পর আর নিয়মিত অভিনয়ে দেখা যায়নি।
আরও বলে রাখা যায়, চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা আঁখির মঞ্চে যাত্রা শুরু ‘অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়’র মধ্য দিয়ে। এই দলের নিয়মিত প্রযোজনা তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কবি’ নাটকের মূল চরিত্র ‘বসন’ করেই আলোচনায় আসেন তিনি। পরবর্তীতে টিভি নাটকে নাম লেখান এই অভিনেত্রী।
এনএটি