‘হ্যালো… শুভ সকাল…’ স্টুডিও থেকে বলা এ দু’টি শব্দের উত্তর ফিরে আসলো ফোনের ওপ্রান্ত থেকে। এরপর ‘আমি বন্যাকে শুভেচ্ছা জানাতে চাচ্ছি…’ এটুকু শুনেই খুশিতে, বিস্ময়ে, অবিশ্বাসে, আনন্দে ঝলমল করে উঠলো রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার চোখমুখ।
প্রধানমন্ত্রী বলে গেলেন, ‘বন্যাকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন বন্যা। তোমার সুরের মুর্ছনায় সারা বাংলাদেশ মোহিত হয়ে থাকুক সেটাই আমি চাইবো। যুগ যুগ ধরে তোমার এই সুরেলা কণ্ঠ বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়কে আরও জাগ্রত করুক। তুমি গান গেয়ে যাও। দীর্ঘজীবী হও। আমার দোয়া সবসময় থাকবে। ’
শেখ হাসিনা বলছেন, বন্যা লক্ষ্মী শিশুটির মতো চুপচাপ শুনছেন। কখনও বিনয়ী হাসিতে গলে পড়ছেন। মাথা নিচু করছেন। দু’হাত জোড় করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন মাঝে মধ্যে।
১৩ জানুয়ারি সকালের ঘটনা এটি। বন্যার জন্মদিন। ভোরবেলা হাজির হয়েছিলেন চ্যানেল আইয়ের ‘গানে গানে সকাল শুরু’ অনুষ্ঠানে।
গান শোনাবেন, ভক্তদের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন। প্রস্তুতি এটুকুই। কিন্তু ফোনের ওপ্রান্ত থেকে যে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠ ভেসে আসবে, এত ব্যাপক প্রস্তুতি তো ছিলো না বন্যার! তাই কণ্ঠে বিনয় ঢেলে বললেন, ‘রবীন্দ্রনাথের একটা লাইনই খালি মনে পড়ছে- হঠাৎ আলোর ঝলকানি লেগে ঝলমল করে চিত্ত। আজকে সকালে হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো আপনার এই ফোনটা... আমি জানি না… একটা বেস্ট গিফট দেওয়ার জন্য…’ শেষদিকে কথা খুব গুছিয়ে বলতে পারছিলেন না। এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো বারবার। আবেগে। সেটা প্রধানমন্ত্রীও বুঝলেন। বলে উঠলেন, ‘আহারে!’
প্রধানমন্ত্রী কথা শেষ করে ফোনটা দিলেন বোন শেখ রেহানাকে। হয়তো সকালবেলা একসঙ্গে বসেছিলেন শুধু বন্যার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
বন্যা বাংলানিউজকে জানালেন, শেখ রেহানা ও তার স্কুলজীবন কেটেছে একসঙ্গেই। শেখ রেহানা জুনিয়র ছিলেন কিছুটা। কিন্তু সম্পর্ক ছিলো বন্ধুর মতোই।
অনুষ্ঠানের বাকিটা সময় বন্যার চোখমুখ জুড়ে এক অপূর্ব শুভ্রতা ঝিলমিল করছিলো যেন! খুবই স্বাভাবিক। জন্মদিনে এমন সারপ্রাইজ কে পেয়েছে কোথায় কবে!
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন বাংলানিউজকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোটবোন শেখ রেহানাও বন্যাকে তার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে পেরে ভীষণ খুশি।
পরে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার বাসায় জন্মদিনের বিশেষ উপহার পাঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, জানান আশরাফুল আলম।
বাংলাদেশ সময় : ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫