দক্ষিণ আফ্রিকায় শুটিং করতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন জনপ্রিয় অভিনেতা রুবেল, ইমন, সিদ্দিক, তানভীর ও অভিনেত্রী অমৃতা খান। দুটি ছবির কাজ করতে গত ৬ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা।
জানা গেছে, মারুফ আহমেদ ও আহমেদ আলী মন্ডলের পরিচালনায় ‘প্রথম দেখা’ ও ‘মিশন আফ্রিকা’ নামের দুটি ছবিতে কাজ করতে অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে রওনা দেয় ইউনিট। কিন্তু দুবাই বিমানবন্দরে ট্রানজিট নেওয়ার পর তাদের সঙ্গে ১৭-১৮ জন বাংলাদেশি বিমানে ওঠে। তখনই তারকারা আন্দাজ করলেন অসামঞ্জস্য কিছু হতে যাচ্ছে। ইমন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা ঢাকা থেকে শুটিংয়ের উদ্দেশ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছিলাম, এর বাইরে কিছু জানতাম না। দুবাইয়ে অপরিচিত লোকদের দেখে চিন্তায় পড়ে গেলাম কী করবো। সবাই মিলে রুবেল ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে আফ্রিকা পর্যন্ত গেলাম। ’
দক্ষিণ আফ্রিকায় ট্যাম্বো বিমানবন্দরের পাশে হোটেল ফোর্স বার্গে ওঠার কথা ছিলো তারকাদের। কিন্তু তারা জানতে পারলেন সেখানে তাদের জন্য কক্ষ বরাদ্দ নেই। আর শুটিংয়ের জন্য কোনো অনুমতিপত্রও নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় পুলিশের পরামর্শে ওখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের সেক্রেটারি খোকন ভাইয়ের সহযোগিতায় তারা নিজ খরচে বিমানবন্দরের সিটি লজ হোটেলে ওঠেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়ে নিরুপায় হয়ে তারকাদের মধ্যে প্রথমে অমৃতা, এরপর রুবেল ও তানভীর এবং ১৩ জানুয়ারি দেশে ফিরেছেন ইমন। ১৬ জানুয়ারি ফিরবেন সিদ্দিক।
দেশে ফিরে বাংলানিউজের কাছে ক্ষোভ জানিয়ে ইমন বললেন, ‘শুটিং ইউনিটে শিল্পী ও কলাকুশলী ছাড়া সাধারণ মানুষকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ায় আমরা হয়রানির শিকার হলাম। এ অবস্থা ঠেকাতে সরকারকেও সক্রিয় হতে হবে। ’
অমৃতা বললেন, ‘এবারই প্রথম দেশের বাইরে ছবির কাজ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এমন ভয়ংকর পরিস্থিতির শিকার হতে হবে বুঝিনি। এটা পুরোপুরি প্রযোজকের দোষ। আমাদের শিল্পীদের মধ্যে বাইরের লোক ঢুকিয়ে আদম ব্যবসা হচ্ছে বলেই চলচ্চিত্রাঙ্গন এগোচ্ছে না। এরকম হতে থাকলে কীভাবে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়ন হবে? যে দুর্নাম হয়েছে তাতে প্রয়োজনে প্রযোজকের বিরুদ্ধে মামলা করবো। ’
অমৃতার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইমন আরও বলেন, ‘আমার যতটুকু ধারণা, ওখানকার একজনের সঙ্গে প্রযোজকের পূর্ব শত্রুতা ছিলো। তার নাম জালাল। আর আমাদের এই বিপদে পড়ার জন্য দায়ী প্রযোজক মশিউর বাপ্পী। তাদেরকে ছাড় দেওয়া উচিত নয়। আমি এর আগে ‘লালটিপ’ ছবির কাজে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলাম। কিন্তু এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে ভাবিনি। ’
প্রযোজক মশিউর বাপ্পীকে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চলচ্চিত্র নির্মাণের নামে আদম ব্যবসা চালিয়ে চক্রের সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন তারকারা। পাশাপাশি এমন পরিস্থিতি থেকেও পরিত্রাণ চান তারা।
বাংলাদেশ সময় : ১৭৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৫