ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

সঞ্জয় দত্তের পকেটে থাকবে ৪৫০ রুপি

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
সঞ্জয় দত্তের পকেটে থাকবে ৪৫০ রুপি সঞ্জয় দত্ত

বলিউড সুপারস্টার সঞ্জয় দত্তের ছবিগুলো কোটি কোটি রুপি আয় করেছে। কিন্তু তাকেই গত সাড়ে তিন বছর পুনের ইয়েরওয়াড়া কারাগারে কাগজের ঠোঙা ও খাকি খাম তৈরির কাজ করতে হয়েছে।

৪২ মাস সাজা ভোগের পর বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা অথবা ১০টার মধ্যে এখান থেকে মুক্ত হবেন তিনি।

জানা গেছে, জেল থেকে বের হওয়ার সময় সঞ্জয় দত্তের পকেটে দেওয়া হবে ৪৪০-৪৫০ রুপি। কয়েদি হিসেবে কাজ করে এই অর্থ উপার্জন করেছেন প্রয়াত অভিনেতা-রাজনীতিবিদ সুনীল দত্তের ছেলে। মোটামুটি দক্ষ হিসেবে তার প্রতিদিনের রোজগার ছিলো ৫০ রুপি। গত সাড়ে তিন বছরে সব মিলিয়ে ৩৮ হাজার রুপি উপার্জন করেছেন ৫৬ বছর বয়সী এই অভিনেতা।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলের ক্যান্টিন থেকে প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনে প্রচুর টাকা খরচ করেছেন সঞ্জয়। এখন তার কাছে অবশিষ্ট আছে মাত্র ৪৫০ রুপি। মুক্ত হওয়ার সময় সেটাই তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।  

জেলে শুরুতে সংবাদপত্রের কাগজ দিয়ে ঠোঙা বানানোর কাজ দেওয়া হয় সঞ্জয়কে। তখন অদক্ষ শ্রমিক হলেও ১০০টি ঠোঙা তৈরির জন্য ৪৫ রুপি করে পেতেন তিনি। এরপর দক্ষ শ্রমিকরা তাকে প্রশিক্ষণ দেন। পাঁচ মাস আগে একটি সরকারি অফিসের জন্য খাকি খাম বানানোর কাজ পান তিনি। এক হাজার খাম বানানোর জন্য মিলতো ৫০ রুপি। এ কাজ সম্পাদন করতে সঞ্জয়ের লাগতো দুই-তিন সপ্তাহ।

এ ছাড়া জেলখানার অভ্যন্তরীণ রেডিও স্টেশনে রেডিও জকি (আরজে) হিসেবেও কাজ করেছেন সঞ্জয় দত্ত। এজন্য অবশ্য কোনো পারিশ্রমিক পাননি। আরজে হওয়ার জন্য সেলের বাইরে কয়েক ঘণ্টা থাকার সুযোগ দেওয়া হতো তাকে। দুপুর ১টায় তিনি বলে উঠতেন- ‘গুড মর্নিং ভাই লোগ’ অথবা ‘গুড আফটারনুন’। তার সঙ্গে তখন থাকতো আরও তিন কয়েদি। রেডিও অনুষ্ঠানে নিজের অভিনীত ছবির কয়েকটি দৃশ্য নিয়ে আলোচনা করতেন সঞ্জয়। কখনও নতুন ছবির পরিকল্পনার কথা জানাতেন। সম্প্রতি বলেছেন শিবজয়ন্তীতে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ সম্পর্কে কিছু গল্প।

এদিকে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কারাগারে সঞ্জয়ের শেষ দিনে সকাল থেকে অন্য কয়েদিরা তার অভিনীত গান ও সংলাপ বলে বিদায় জানাচ্ছেন। গুন্ডা থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তাসহ নানারকম চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা তাদেরকে বলতেন তিনি। ক্যামেরার সামনে মারামারির দৃশ্যে কাজ করার চেয়ে কয়েদি জীবন অনেক কঠিন বলে মন্তব্য তার। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কারা পরিদর্শনে এলে তাদেরকে স্যালুট দিতেন তিনি।

পুনের কারাগারে শুরুর দিকে প্রচুর কাঁদতেন সঞ্জয় দত্ত। তাছাড়া প্রচুর ধূমপায়ী হওয়ায় কয়েদিদের মতো জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে ব্যাপক হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। পরে অবশ্য সময় কাটানোর জন্য স্ত্রী ও কাছের মানুষদের চিঠি লিখতেন তিনি। ভক্তদের অনেকে তাকে চিঠি লিখতো, তিনিও উত্তর দিতেন। আধ্যাত্মিক বই পড়েও সময় কাটতো তার। শুরুতে জড়তা থাকলেও পরে অন্য কয়েদিদের সঙ্গে মিশুক হয়ে গেছেন তিনি।

১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে জড়িতদের কাছ থেকে বেআইনি অস্ত্র কেনার দায়ে পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করেছেন সঞ্জয় দত্ত। ১৯৯৬ সালে কারাদন্ড দেওয়া হয় তাকে। মুম্বাইয়ের আর্থার রোড কারাগারে দেড় বছর জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান তিনি। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট থেকে তাকে পাঁচ বছরের সাজা পূর্ণ করার আদেশ দেন। এরপর থেকে ৪২ মাসের সাজা ভোগ করেন তিনি।


বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
বিএসকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।