‘ভালোবাসার প্রহর’ দেখাবেন অভিনেতা-নির্মাতা মাহফুজ আহমেদ। তার এই ভালোবাসায় থাকছে না কোনো বিরতি! তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বাণীচিত্র থেকে নির্মিত নতুন নাটকগুলো দেখানো হবে বিরতিহীন।
বাংলানিউজ: বিজ্ঞাপন বিরতিহীন নাটক নির্মাণের উদ্যোগ নিলেন কী ভেবে?
মাহফুজ আহমেদ: আমাদের দর্শক চলে গেছে বাইরের দেশের চ্যানেলগুলোতে। সব চ্যানেলে এমন কি কনটেন্ট দেখাচ্ছে যে দর্শকরা চলে যাবে? আমাদের দর্শককে ফেরাতে হবে। ‘ভালোবাসার প্রহর’ এই উপলব্ধি থেকে একটা প্রতিবাদ, একটা আন্দোলন। সবাই চায় আমাদের টেলিভিশনের এই দীনতা দূর হোক আর আমাদের দর্শকরা ফিরে আসুক নিজেদের চ্যানেলের সামনে। আমরা দর্শকদের কাছে ফিরতে চাই, দর্শকদের ফেরাতে চাই। দর্শক বিজ্ঞাপনের ভিড়ে দূরে সরে গেছে। এ বিজ্ঞাপনকে সরিয়ে কীভাবে আমরা নাটককে আবার আগের জায়গায় নিয়ে যেতে পারি, সেজন্যই এই আয়োজন। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই- দর্শকদের কাছে যেতে চাই। দর্শকদেরকে আমাদের নাটকে ফেরাতে চাই।
আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আরটিভি কর্তৃপক্ষের কাছে, এজন্য যে তারা অনুভূতিটা হৃদয় দিয়ে ধারণ করছেন এবং ফলপ্রসূ কিছু করা যায় কি-না সেটা চিন্তা-ভাবনা করেই এই উদ্যোগটা নিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন টাইটেল স্পন্সর জুঁই, কো-স্পন্সর ক্রাউন সিমেন্ট ও অ্যালপেনলিবে। সত্যি বলতে ১ লাখ ৫০-৬০ হাজার টাকা দিয়ে নাটক বানানো সম্ভব না। ভালো নাটক বানাতে হলে আরও টাকা লাগে। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি না পাই আমরা ভালো নাটক বানাতে পারবো না।
বাংলানিউজ: ‘ভালোবাসার প্রহর’-এ প্রেম-ভালোবাসার নাটকই দেখাবেন?
মাহফুজ: আমরা তরুণ-তরুণীর তথাকথিত দৌড়ঝাঁপ কিংবা গতানুগতিক প্রেমের গল্পের নাটক করবো না। হ্যাঁ এসব নাটকেও প্রেম আছে, ভালোবাসা আছে। আমরা যে নাটকটি দিয়ে শুরু করছি সেটা দু’জন অভিনেতাকে ঘিরে। এ নাটকে কি প্রেম নেই? আছে, এখানেও প্রেম আছে। আমাদের কাছে প্রেম হচ্ছে অনেক বিশাল একটি ব্যাপার। যে লোক তার কাজের প্রতি সৎ, তার কাজের প্রতি আন্তরিক, সেটাও তো প্রেম, সেটাও তো ভালোবাসা। অনেক বড় ভালোবাসা। আমাদের ‘ভালোবাসার প্রহর’-এর নাটকগুলোতে ভালোবাসাটাকে আমরা এভাবেই দেখবো।
বাংলানিউজ: আপনাদের এ আয়োজনে যারা পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন, তারা কী ভাবছেন?
মাহফুজ: টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কোথায় দেবেন, কী পরিমাণ দেবেন এটা নির্ধারণ করেন বিজ্ঞাপনদাতারা। চ্যানেলের হাতে বিষয়টি নেই। একেবারেই নেই। আমি খুব খুশি, এজন্য খুশি যে এ কাজটি করতে যখন গেলাম, জুঁই কর্তৃপক্ষ আমাকে বললো আমরা পপআপ দেবো তিন মিনিট সর্বোচ্চ। এতো পপআপ প্রয়োজন নেই। আসলে তাদের জন্য বরাদ্দ ছিলো পাঁচ মিনিট। তারা নেমে এলেন তিন মিনিটে। আর ক্রাউন সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ বলেছেন, তারা এক মিনিটও পপআপ দেখাবেন না, তারা দর্শককে নাটক দেখাতে চান। এ ধরনের উদ্যোগ ছাড়া এখনকার সময়ে নাটক বানানো সম্ভব না। আমাদের সব বিজ্ঞাপনদাতারা যদি এমন হতো যে, তারা বলছেন নাটক দেখতে চাই, বিজ্ঞাপন কমান, তাহলে কী ভালোই না হতো!
বাংলানিউজ: আরটিভির ভাবনাটা কেমন দেখলেন?
মাহফুজ: এই চ্যানেলও চায় দর্শকদের কাছে নাটক ফিরে যাবে। তারাও দৃঢ়সঙ্কল্প নিয়ে বললেন, দর্শকদের আমরা ফিরিয়ে আনবো। বিজ্ঞাপনের চাপ ও যা যা ঝামেলা আছে তা কমিয়ে এই প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি নাটকের মানুষের হাতে যেন থাকে বিষয়টা। তাই এই প্রজেক্টটি প্রযোজনা করার দায়িত্ব পেয়েছি আমি।
বাংলানিউজ: প্রচার সময় হিসেবে রাত ১১টা ২০ মিনিট বেছে নিলেন কেনো?
মাহফুজ: লক্ষ্য করে দেখা গেছে, এ সময়ে প্রচারিত নাটকগুলো জনপ্রিয় হয়। এটা ঈদের সময়ও দেখা গেছে, অন্যান্য সময়েও দেখা গেছে। অনেক গবেষণা করেই সময়টা নির্বাচন করা হয়েছে। কারণ বিশাল একটা অংশ রাত ১০টার আগে টিভি সেটের সামনে বসেন না। তারপরও দেখা যাক। আমরা কেমন সাড়া পাই সেটার ওপর নির্ভর করে আগামীতে বিষয়টি ভেবে দেখবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৬
জেএইচ/এসও