এরই মধ্যে সেন্সর বোর্ডের বর্ণনা সম্বলিত কর্তনের চিঠিটি ভাইরাল হয়েছে (সনদপত্র পাওয়া সব চলচ্চিত্রের বিবরণ প্রতি মাসেই সেন্সরবোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়ে থাকে, ‘ডুব’-এর বেলায়ও ব্যতিক্রম ঘটেনি)। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন ফারুকী।
৮ আগস্ট ছাড়পত্র পাওয়ার পর দৃশ্য কর্তনের ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে চাননি এই নির্মাতা। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফারুকী নিজেই এ নিয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন।
২৭ অক্টোবর মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘ডুব’-এর নির্মাতা লিখেছেন, ‘এই বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই নাই! এখন যেহেতু সরকারের এই চিঠি উন্মুক্ত প্লাটফর্মে কেউ এনেছেন এবং গত কিছু দিন ধরেই এই বিষয়ে আমাদের অগণিত ভক্ত দর্শক চিঠি লিখেছেন, সেহেতু আমার একটা ভাষ্য লিপিবদ্ধ থাকা দরকার মনে করছি। ’
ফারুকী লিখেছেন, ‘চিঠিটা যারা প্রচার করেছেন তারা একদিকে আমাদের এবং দর্শকদের উপকারই করেছেন। চিঠির কল্যাণে সবাই জানতে পারলেন আমরা সর্বসাকুল্যে দুই মিনিট পঁচিশ সেকেন্ড বাদ দিয়েছি। তার মানে গল্প যা থাকার তা-ই আছে। সামনে ট্রেলার আসবে, তখনই আরো স্পষ্ট হওয়া যাবে। আমার আর্টিস্টিক এক্সপ্রেশন বা গল্পের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাট সেন্সর বোর্ড আমাকে করতে বলে নাই, আমিও তা করার প্রশ্নই আসে না। ’
দুই নম্বর পয়েন্ট হিসেবে ফারুকী উল্লেখ করেছেন, ‘বস, আপনার কাছে আমরা এই আপোষ প্রত্যাশা করি না। আমাদেরকে আপনি হারতে দিবেন না, প্লিজ!—এই ধরনের চিঠি প্রচুর পাচ্ছি। এর পেছনে যে ভালোবাসা আছে সেটার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমি তো কোনো যুদ্ধ করতে আসি নাই। ফলে জয়-পরাজয়ের খেলায় আমি নাই। আমি একটা গল্প বলতে আসছি, সেটাও মোটেও যুদ্ধংদেহী না। সেখানে বরং কিছু ভীষণ ভালনারেবল চরিত্র আছে।
এখানে যুদ্ধের কোনো জায়গাই নাই, বরং ধ্যানের জায়গা থাকতে পারে, ভাবনার জায়গা থাকতে পারে। যাই হোক আবার আসি কাটের প্রসঙ্গে। যদিও আমি এই রকম যে কোনো অপ্রাসঙ্গিক কাটেরই বিরুদ্ধে, কিন্তু কখনো কখনো আপনাকে বিগার পিকচার দেখতে পারতে হবে।
বাদ দেয়া শট এবং সংলাপ দেখলেই আক্কেলমান্দ লোকও বুঝতে পারবেন জুতা বদলানোর শট বা এই গাড়ী যাবে গাজীপুর— এইগুলো বাদ দিলেই গল্পের গাড়ির গন্তব্য বদলে যাবে না, গল্পের গাড়ি তার বাড়ি পৌঁছুবেই। ’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে পাঠানো চিঠিতে দৃশ্য কেটে ফেলার বিবরণে লেখা হয়েছে, সাবেরী কর্তৃক নিতুর সঙ্গে জুতা পাল্টানোর দৃশ্য ও সংশ্লিষ্ট সংলাপ কর্তন করা হয়েছে। ফেলে দেওয়া দ্বিতীয় দৃশ্যের বিবরণে লেখা হয়েছে, জাবেদ হাসানের সংলাপ ‘এই গাড়ি, গাজীপুর চলো...। ’ আরেকটি দৃশ্যের কর্তনের বিবরণে লেখা আছে, জাবেদ হাসানের মরদেহের পাশে নিতুর সঙ্গে তার শিশুসন্তানের দৃশ্য কর্তন করা হয়েছে। বিবরণে লেখা হয়েছে, জাবেদ হাসানের কন্যা সাবেরীর সঙ্গে তার চাচার কথোপকথন অংশে, ‘এখন নিতু তো বলছে নয়নতারায় কবর দিতে...’ শীর্ষক চাচার সংলাপসহ কবরের স্থান নির্ধারণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দৃশ্য ও সংলাপ কর্তন করা হয়েছে। সব শেষে উল্লেখ করা হয়েছে, জাবেদ হাসানের মৃত্যুর পর অ্যাম্বুলেন্সে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়ার একটি দৃশ্যের পর অবশিষ্ট দৃশ্য ও সংলাপ কর্তন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭
এসও