মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ পদক নেন তারা।
সিনেমা ও থিয়েটারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ২০০৯ সাল থেকে এই পদক দিয়ে আসছে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি।
বিখ্যাত এই চলচ্চিত্রকারের পৈত্রিক নিবাস এখনকার রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পদক নিয়ে অভিনেতা ব্রাত্য বসু জানান, জীবনে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গণে তিনি এমন পদক পেলেন। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই। এ ধরনের পুরস্কার সামনের দিনে তার যে অবসাদ, বিষণ্নতা এবং যে উৎসাহ- এ সব মিলিয়ে তাকে এমন কোনো রসায়নে পৌঁছে দেবে যার জন্য তিনি আরও একদিন, আরও একবার, আরও এক মুহূর্তের জন্য আরও একটি কাজ করার উৎসাহ পাবেন।
অভিনেত্রী জয়া আহসান জানান, রাজশাহী তার কাছে পূণ্যভূমি। যার দু’টি কারণ। একটি হলো ঋত্বিক ঘটক এবং অপরটি কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। ঢাকার বাইরে এমন আয়োজন চমৎকার। ঋত্বিক ঘটকের নামে প্রবর্তিত এ পদক তার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ। দেশ-বিদেশে পুরস্কার হয়তো অনেক পেয়েছেন, কিন্তু এটার ওপরে আর কিছুই নেই।
ঋত্বিক সম্মাননা পদকের জন্য এবার ব্রাত্য বসু ও জয়া আহসান ছাড়াও গুণী অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা ভিকে জোসেফ, রাজশাহীর কবি রুহুল আমিন প্রামাণিক এবং লেখক অধ্যাপক ফজলুল হককে মনোনীত করা হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গত শনিবার (৪ নভেম্বর) ভিকে জোসেফ, রুহুল আমিন প্রামাণিক ও অধ্যাপক ফজলুল হকের হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সংষ্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের পক্ষে পদক নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর সাইদুর রহমান খান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠানের আয়োজনকারী সংগঠন ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি ডা. এফএমএ জাহিদ। রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অভিজিত চট্টোপাধ্যায়, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজের কাউন্সিল সদস্য প্রেমেন্দু মজুমদার ও ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ‘ঋত্বিক কুমার ঘটক: এক বিরলপ্রজ প্রতিভার নাম’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এর আগে গত শনিবার (৪ নভেম্বর) ছিল কালজয়ী চলচ্চিত্র নিমার্তা ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন। সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিল সম্মাননা পদক ও চলচ্চিত্র উৎসব। এবার উৎসবে রাজশাহীর পদ্মা পাড়ের লালন মঞ্চে ৮টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ঋত্বিকের পুরো নাম ঋত্বিক কুমার ঘটক। তিনি ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মারা যান কলকাতায়। তার জীবনের একটা বড় অংশ কেটেছে রাজশাহীতে। তিনি চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ শেষ করেন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে। ১৯৪৬ সালে আইএ পরীক্ষা দেন রাজশাহী কলেজ থেকে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পরপরই পরিবারের সঙ্গে চলে যান ভারতে। তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো এখনও দর্শকদের বিমোহিত করে। গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আজও স্মরণীয় তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৭
এসএস/এএ