ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

যাত্রার দর্শক এখনও আছে, শুধু চাই ভালো পরিবেশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
যাত্রার দর্শক এখনও আছে, শুধু চাই ভালো পরিবেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘মিলন মালা’ যাত্রাপালা-ছবি- হোসাইন মোহাম্মদ সাগর

ঢাকা: শহরের মানুষ শেষ কবে যাত্রা দেখেছেন, তা হয়তো মনে করতে পারবেন না অনেকেই। তেমনি মনে করতে পারলেন না রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাসিন্দা আফসারা আফরিনও। বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, শেষ কবে যাত্রা দেখেছি ঠিক মনে নেই। তবে শিল্পের এ শাখার যে অনন্য উপস্থাপন শৈলী, তা মনে রেশ কেটে যাওয়ার মতো।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) শিল্পকলা একাডেমির চিলেকোঠায় যাত্রাপালার শেষে এমনটাই বলছিলেন এ দর্শক। তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলে এখনও কোথাও কোথাও যাত্রাপালা হয়।

তবে শহরে এ জিনিস খুবই দুর্লভ। ফলে শিল্পের এই ঐতিহ্যবাহী শাখাটি যেন হারিয়ে যেতেই বসেছে। তবে শিল্পকলা একাডেমির এ যাত্রাপালার আয়োজন শহরবাসীর জন্য সত্যিই সুন্দর বিনোদনের বিষয়।

শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করেছে তিন দিনব্যাপী যাত্রাপালা। জাতীয় নাট্যশালায় এ আয়োজন চলবে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে তিনটি করে পালা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় যাত্রাপালা ‘মিলন মালা’। খুলনার বনানী অপেরার এ পালা পরিচালনা করেন সেলিম রেজা। যাত্রাপালার বিভিন্ন দিক নিয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, শুধু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে যাত্রা শিল্প বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে। যাত্রা শিল্পীরাও এ কারণে বর্তমানে করুণ দিনযাপন করছেন। যাত্রার উন্নয়ন ও নতুন শিল্পী তৈরিতে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ।

যাত্রাপালা প্রদর্শনীর এ আয়োজন প্রশংসিত হয় সাধারণ মানুষের কাছে। চিলেকোঠার মঞ্চে যাত্রা দেখতে হাজির হয়েছিলেন সমাজের প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা শিল্পকলার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। একইসঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম এ যাত্রা অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজনের প্রত্যাশা করেন।

মঞ্চে মুখের অভিব্যক্তি আর সংলাপ প্রক্ষেপণে দর্শকদের মুগ্ধ করেন শিল্পীরা। এ শিল্পীরা প্রাণের টানে যাত্রা করেন। তাদের অর্থের প্রাচুর্য নেই। তারা বিশ্বাস করেন, যাত্রার দর্শক এখনও রয়েছে, শুধু চাই ভালো পরিবেশ।

ষোড়শ শতকে অভিনয়-কলা হিসেবে যাত্রার উদ্ভব হলেও এর বিকাশ শুরু হয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। তবে আধুনিক আকাশ সংস্কৃতি আর ইন্টারনেটের প্রভাবে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার গ্রামীণ এ শিল্প ঐতিহ্যটি।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এইচএমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।