আবছায়া আলোতে ততক্ষণে হাজির সুহাসিনী এই অভিনেত্রী। চার দেয়ালে ধ্বনিত নামটির পরিবর্তে ‘রানু’ নামটিই যেন ভীষণ পছন্দ তার!
অসাধারণ উপস্থাপন আর সৌন্দর্যের দ্যুতি ছড়িয়ে নিজেই বলতে থাকলেন সেই কথা-আমি আজ থেকে ‘রানু’।
দর্শকদের সাড়ায় ‘দেবী’ ব্যবসা সফল হলে সামনে আরও ভালো সিনেমা নির্মাণের অঙ্গীকার করেন হালের এই লাস্যময়ী। অনেক স্বপ্নের দেবী’র নানা দিক নিয়ে কথপোকথনের পর গলা ছেড়ে গাইতে থাকলেন কলকাতার অনুপম রায়ের লেখা সেই গান।
‘ক্রমশ এ গল্পে আরও পাতা জুড়ে নিচ্ছি/দু’মুঠো বিকেল যদি চাও ছুঁড়ে দিচ্ছি/আরও কিছুক্ষণ যোগাযোগ ধরে রাখছি। /আঙুলে আঙুল যেন ভুল করে ডাকছি/এ ছেলে মানুষী তুলি দিয়ে আঁকছি। ’
বুদ্ধিদীপ্তময় কথার জাদু আর গানে মুগ্ধতা ছড়ালেন দর্শকদের মধ্যে। জয়ার পর একই গান গাইলেন ‘নীলু’ চরিত্রের শবনম ফারিয়া।
এই ছবির মধ্যে দিয়েই বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছে তার। নীলু’র কথা, গানে করতালির বন্যা বয়ে যায় হলজুড়ে। আবদার মেটাতে সেলফিও তোলেন দর্শকদের সঙ্গে।
‘হ্যালো গুড ইভিনিং’ দিয়ে শুরু করলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। বলেন, সিনেমা মুক্তির পর খুব চাপে ছিলাম। তাছাড়া শরীরটাও খারাপ ছিলো।
জয়া আপা বললেন, ছায়াবাণীর যারা দর্শক তারা প্রকৃত বাংলা সিনেমার দর্শক। তুমি না এলে এক্সপেরিয়েন্সটা মিস করবে। আমি অনেক খুশি।
এসব ঘটনা প্রবাহ ময়মনসিংহ শহরের ছায়াবাণী সিনেমা হলের। প্রয়াত নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত উপন্যাস ‘দেবী’ অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটির প্রচারণায় শনিবার (২০ অক্টোবর) রাতে জয়া-ফারিয়াদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে ছায়াবাণী।
প্রায় ঘণ্টা দেড়েক সিনেমা উপভোগের পাশাপাশি ‘দেবী’র অনবদ্য পারফরম্যান্সে মন জয় করলেন এক সময়কার প্রাচীন নাটকঘর হিসেবে পরিচিত এই অমরাবতী নাট্যমন্দিরের (বর্তমান নাম ছায়াবাণী) দর্শকদের।
সিনেমা হলটির মালিক নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম ফিরোজ বাংলানিউজকে জানান, ১৯৬৪ সালে এই সিনেমা হলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
গত কয়েক বছর যাবৎ বাংলা সিনেমা দর্শক সফল না হলেও দেবী সিনেমাটি আশানুরূপ সাড়া ফেলেছে। আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে সিনেমা হলটি।
‘দেবী’ নিয়ে ময়মনসিংহের দর্শকদের আশাতীত সাড়ায় মুগ্ধতার কথা জানিয়ে উপস্থাপক রুম্মান রশীদ খান ‘রানু’ চরিত্রের জয়া আহসানের কাছে জানতে চান কলকাতাতেও ভক্তদের এমন উন্মাদনা পান কীনা?
প্রশ্ন ছুঁড়তেই মাইক হাতে প্রস্তুত দেবীর প্রযোজক ও নায়িকা উচ্চারণ করলেন-উন্মাদনা পেয়েছি তবে এমনটি পাইনি। আপনাদের ভালোবাসা পেয়ে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি।
ময়মনসিংহে এসেছেন কিন্তু মুক্তাগাছার মণ্ডার স্বাদ চেখে দেখেননি এমন মানুষ নেহায়েতই কম। সেই কথাটি স্মরণ করিয়ে দিলেন জয়া নিজেই-ঢাকা থেকে আসতে আসতে শবনম ফারিয়াকে বলছিলাম, যতই নায়িকা যাই হই, আগে বিখ্যাত মণ্ডা নিয়ে যেতে হবে।
এর আগে ছায়াবাণীতে প্রবেশ করে হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিনেমার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন জয়া-ফারিয়া-অনম বিশ্বাসরা। এই সময় বাংলানিউজের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জয়া। তিনি বলেন, দেবী নিয়ে আমি খুব ভালো সাড়া পেয়েছি।
সবাই বলছে ছবিটি চোখের পলকে শেষ হয়ে গেলো, কেন আরও বড় হলো না? মূলত ভালো ছবির বৈশিষ্ট্যই নিমিষে শেষ হয়ে যাওয়া। দর্শক বলছে পয়সা উসুল এটা অনেক বড় পাওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৮
এমএএএম/আরআর