অনুষ্ঠানে ভাবনার নৃত্য পরিবেশনা সত্যিই খুব নান্দনিক ছিলো। বিশেষ করে ‘ভাবনা’ তাদের দ্বিতীয় গান ‘হেই হেই’র তালে তালে নাচের পরিবেশনা শুরু করলে স্টেডিয়াম জুড়ে করতালি বাজতে থাকে।
তাদের পরিবেশনার পর শুরু হয় লোকশিল্পী আবদুল হাই দেওয়ানের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। 'পিরিতের বাজার ভালো না', 'কোন দেশে রইলারে দয়াল', 'ভালোবাসিয়ারে বন্ধু', বন্ধুরে তোর জ্বলায় বাঁচি না', এবং 'তোমারও লাগিয়া' গানগুলোর মাধ্যমে প্রথমদিনের দ্বিতীয় পরিবেশনায় শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন আব্দুল হাই দেওয়ান।
তার গান আর্মি স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রতিটি দর্শককে বিমোহিত করেছে। গানের মূর্ছনায় সবাই যেনো পেয়েছে মাটি-মানুষ ও শেকড়ের ঘ্রাণ।
তার পরেই মঞ্চে সুরের জাদু ছড়ান পোল্যান্ডের ব্যান্ড দল 'সিকান্দা'। তাদের পরিবেশনাও ছিলো নান্দনিকতা।
সিকান্দা'র পরিবেশনার পরই শুরু হয় মঞ্চে উপস্থিত অতিথিবৃন্দের বক্তৃতার পর্ব। এ আয়োজনে বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তরের মেয়র সাঈদ খোকন, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
ফোক ফেস্টের আয়োজন প্রসঙ্গে সাইদ খোকন বলেন, 'এ আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববাসী বাংলার লোকজ সংগীতের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানছে। এটাই হলো সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আর ফোক ফেস্ট নিয়ে দর্শকদের মধ্যে যে মুগ্ধতা দেখেছি, তা সত্যিই অভিভূত হবার মতো। আমি সকল উপস্থিতির সুন্দর ভবিষ্যৎ ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। '
এরপর সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিতে এসে মজা করে বলেন, 'গানের ভিতরে বক্তব্য ভালো দেখায় না। তাই বেশি কথা বলবো না। এজন্য সবার পক্ষ থেকে একটা তালি হয়ে যাক। গত চার বছর ধরে এমন একটি আয়োজন টানা করে আসার জন্য আয়োজক সান কমিউনিশেন এবং উদ্যোগতা অঞ্জন চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কথা না বললেই নয়, কারণ তার মতো এমন একজন সংস্কৃতমনা প্রধানমন্ত্রী পেয়ে সত্যি আমরা গর্বিত। 'এরপর প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আল মুহিত বলেন, 'আমি দুঃখিত, কিছুটা দেরিতে (৯টায়) অনুষ্ঠানে আসার জন্য। বেশি কথা আমিও বলবো না। এমন একটি আয়োজনের জন্য আমিও অঞ্জন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাই। কৃতজ্ঞতা জানাই দর্শকদের প্রতি- যাদের সহযোগিতায় এ আয়োজন প্রাণবন্ত হয়েছে। '
অর্থমন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পরেই মঞ্চে উঠে বঙ্গবন্ধুর প্রশংসা করেন ইন্ডিয়ান সঙ্গীতশিল্পী সাত্যর্কি ব্যানার্জি। এরপর তিনি পরিবেশনা শুরু করেন। বাঙালী জীবনের একবারে খাঁটি তিনটি গান করেন তিনি। এগুলো হচ্ছে- একলা নিতাই, পাল তুলে দে মাঝি হেলা করিস না এবং বাঙালী করেছো প্রভৃতি।
এরপর কিছুক্ষণ বিরতি শেষে মঞ্চে উঠে ওয়াদালি ব্রাদার্স। সূফি গানের দরদী সুরের মূর্ছনায় তারা দর্শকদের ঘোলোআনা আনন্দে মাতিয়ে তোলেন। তারা 'ইয়া মোহাম্মদ' গান দিয়ে প্রথমদিনের শেষ পরিবেশনার প্রথম গান শুরু করেন। ওয়াদালি ব্রাদার্সের মনোমুগ্ধ পরিবেশনার মাধ্যমে ফোক ফেস্টের প্রথমদিনের সমাপ্তি ঘটে।
তিন দিনব্যাপী উৎসবের প্রথমদিন বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) নৃত্যদল ভাবনার পরিবেশনায় শুরু হয়। অনুষ্ঠান শুরুর ৩০ মিনিট আগেই সন্ধ্যা ৬টায় নিবন্ধিত দর্শনার্থীদের জন্য স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর আয়োজনস্থলে জায়গা নেন দর্শনার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘন্টা, ১৫ নভেম্বর ২০১৮
ওএফবি/এমএমএস