ঢাকা: ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। বুধবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহিলা পরিষদের পরিচালক (অ্যাডভোকেসি) অ্যাডভোকেট মাসুদা আক্তার বলেন, বেআইনি সালিশ, বেআইনি ফতোয়া, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের তদারকিতে ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা আমাদের উদ্বেগ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, এই ধর্ষকরা কোনো না কোনো অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িত, ক্ষমতার কাছাকাছি যাদের অবস্থান। এজন্য বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছরের ১০ মাসে নারী নির্যাতন বেড়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
মাসুদা আক্তার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একটি সরকারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনার উপস্থাপনা আমাদের জন্য অশনিসংকেত। এসব দেশকে সমাজকে পশ্চাৎপদ রক্ষণশীল ও সাম্প্রদায়িক চেতনার সংকীর্ণতায় আবদ্ধ করার অপপ্রয়াস।
মাসুদা আক্তার আরও বলেন, আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২০ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ২৯ দফা দাবি জানাচ্ছে মহিলা পরিষদ। নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ২৯ দফা বাস্তবায়ন হলেই ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন কমে আসবে।
তিনি বলেন, এ উপলক্ষে ১৫ দিন ব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে মহিলা পরিষদ। তিনি কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলে আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই ১০ মাসে মোট ২৭১১ জন শিশু ও নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৫৮ জন। গণধর্ষণ ২০৫ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৮ জনকে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ২ জন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
টিএম/জেআইএম