বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান চিত্রনাট্যকার, পরিচালক ও প্রযোজক ছটকু আহমেদ ৭৫ পেরিয়ে ছিয়াত্তর বছরে পা দিয়েছেন।
বুধবার (৬ অক্টোবর) ‘সত্যের মৃত্যু নেই’খ্যাত এই নির্মাতা নিজের হীরক জয়ন্তী উদযাপন করছেন।
জন্মদিন উপলক্ষে ছটকু আহমেদ ফেসবুকে লেখেন, ‘আজ ৬ অক্টোবর আমার ৭৫তম জন্মদিন। ৭৬ বছরে পদার্পণ করলাম। দোয়া করবেন যেন জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সুস্থ ও সুখে শান্তিতে সবাইকে নিয়ে কাটিয়ে যেতে পারি। ’
১৯৪৬ সালের ৬ অক্টোবর পুরনো ঢাকার নারিন্দায় ছটকু আহমেদের জন্ম। কিন্তু তার পৈতৃক ভিটা বিক্রমপুরে। তার বাবা শরফুদ্দীন আহমেদ ছিলেন সিভিল ডিফেন্সের ট্রেনিং অফিসার ও জোহরা শরফুদ্দীন ছিলেন নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা। বাবা-মার চাকরির সুবাদে ছটকুর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে।
ছোট পর্দা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন ছটকু আহমেদ। ১৯৬২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নিয়ে প্রথম নাটক পরিচালনা করেন তিনি। ১৯৭২ সালের ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার সহকারী পরিচালক হিসাবে তার বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয়।
১৯৮২ সালে ‘নাত বৌ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে একক পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে ছটকু আহমেদের। এতে অভিনয় করেন তখনকার সুপারহিট জুটি রাজ্জাক-ববিতা। এরপর ‘রাজদণ্ড’, ‘গৃহবিবাদ’, ‘চেতনা’, ‘মায়া-মমতা’, ‘সত্যের মৃত্যুর নেই’, ‘বুকের ভেতর আগুন’, ‘বুকভরা ভালোবাসা’, ‘মিথ্যার মৃত্যু’, ‘প্রতিবাদী মাস্টার’ ও ‘আজকের রূপবান’সহ ১৫টি সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি। ।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ছটকু আহমেদ তিন শতাধিক সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন। যার মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে ‘সত্য মিথ্যা’, ‘বাংলার বধূ’, ‘লালু মাস্তান’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘ঘাতক’ ও ‘চেতনা’। তিনি এজে মিন্টু পরিচালিত ‘সত্য মিথ্যা’ সিনেমার সংলাপ করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৭৯ সালে ছটকু আহমেদ বিয়ে করেন মসরুরা আহমেদকে। তার স্ত্রী ‘বুক ভরা ভালোবাসা’ ও ‘বুকের ভেতর আগুন’ সিনেমার প্রযোজক। তাদের সংসারে চার মেয়ে। বড় মেয়ে সাদিয়া আহমেদ, মেজো মেয়ে ফারিয়া আহমেদ, সেজো মেয়ে শাহরিয়া আহমেদ ও ছোট মেয়ে নাজিয়া আহমেদ। তারা সবাই উচ্চশিক্ষিত।
বর্তমানে শারীরিকভাবে ভালো নেই ছটকু আহমেদ। বেশ কিছুদিন ধরে প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যায় ভুগছেন তিনি। এর চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি কলকাতায় গিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২১
জেআইএম