ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

লতার আসল নাম কী, মঙ্গেশকর যুক্ত হলো যেভাবে

বিনোদন ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
লতার আসল নাম কী, মঙ্গেশকর যুক্ত হলো যেভাবে লতা মঙ্গেশকর

সুরের ইন্দ্রজালে মানুষের হৃদয় জয় নেওয়া কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর আর নেই। সুর, লয়, ছন্দের তালে আর দর্শক মাতাবেন না তিনি।

সুরের পাখির সুর থামলো ৯২ বছর বয়সে করোনা পরবর্তী জটিলতায়।  

রোববার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৮টার দিকে মারা যান। মৃত্যুর আগে ভারতের মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এই সুর-সম্রাজ্ঞী।   

উপমহাদেশের সংগীত জগতে লতা মঙ্গেশকর পরম শ্রদ্ধেয় নাম। যখনই তিনি কোনও গান গেয়েছেন, তার কণ্ঠে যেন জাদু তৈরি করেছেন। আর মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেছে শ্রোতাদের হৃদয়ের গহীনে।  

বিশ্বব্যাপী লতা মঙ্গেশকরের কোটি কোটি ভক্ত রয়েছে। কিন্তু খুব কম ভক্তই আছেন যারা তার নামের সঙ্গে ‘মঙ্গেশকর’ যুক্ত হওয়ার ঘটনাটি জানেন। লতার পরিবারিক নাম ছিল কুমারী লতা দীননাথ মঙ্গেশকর। লতা মঙ্গেশকরের পিতার নাম পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকর। তার বাবা মারাঠি থিয়েটারের একজন বিখ্যাত অভিনেতা এবং নাট্য সংগীত সুরকার ছিলেন। তাই সংগীত শিল্প তার উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত।  

কথিত রয়েছে, লতার বাবা তার বাবার দিকের চেয়ে তার মায়ের দিকে বেশি সংযুক্ত ছিলেন। দীননাথের মা ছিলেন ইসুবাই দেবদাসী। তিনি গোয়ার মাঙ্গেশি গ্রামে থাকতেন। মন্দিরে ভজন-কীর্তন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখান থেকেই দীনানাথ ‘মঙ্গেশকর’ উপাধি পান।  

১৯২৯ সালে জন্মের সময় লতার নাম রাখা হয়েছিল হেমা। কিন্তু একবার বাবা দীননাথের ‘ভববন্ধন’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন। যেখানে একটি নারী চরিত্রের নাম ছিল লতিকা। লতার বাবা এই নামটি এতোটাই পছন্দ করেছিলেন যে তিনি তার মেয়ের নাম হেমা পরিবর্তন করে ‘লতা’ রাখেন। সেই ছোট্ট হেমাই এখন লতা মঙ্গেশকর নামে পরিচিত।

ভারতের ইন্দোরের ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ‘মজবুর’ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে প্লেব্যাকে হাতেখড়ি হয় তার। পঞ্চাশের দশকে বলিউডে অপরিহার্য হয়ে ওঠে তার গান।

‘পরিচয়’ সিনেমার ‘বীতি না বিতাই’ গানে জন্য ১৯৭৩ সালে সেরা গায়িকা হিসেবে প্রথমবার ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। পরে ‘কোরা কাগজ’ সিনেমার জন্য ১৯৭৫ সালে এবং ‘লেকিন’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৯০ সালেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।  

ক্যারিয়ারে লতা মঙ্গেশকর ৩৬টি ভাষায় প্রায় ৫০ হাজাের গান গেয়েছেন। ১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুকে স্থান পান তিনি।  

পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা, পদ্মবিভূষণ, এনটিআর জাতীয় পুরস্কার এবং ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ভারতরত্ন পেয়েছেন তিনি। এছাড়া ফ্রান্সের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অফিসার দে লা দি’ অনারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই কিংবদন্তি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২২
এনএটি

আরও পড়ুন: 

কেন বিয়ে করেননি লতা মঙ্গেশকর? 
সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক
লতা মঙ্গেশকর আর নেই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।