ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘জীবন থেকে নেয়া’র স্রষ্টা জহির রায়হানের জন্মদিন

বিনোদন ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
‘জীবন থেকে নেয়া’র স্রষ্টা জহির রায়হানের জন্মদিন জহির রায়হান

বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের কালজয়ী এক পথিকৃতের নাম জহির রায়হান। প্রগতিশীল ও প্রতিবাদী সাহিত্য চর্চা করতে করেতই একসময় চলচ্চিত্রকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।

যার ক্যামেরায় সেলুলয়েডে উঠে এসেছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম আর রক্তাত্ব ইতিহাস।  

জাতির এই সূর্যসন্তানের জন্মদিন শুক্রবার (১৯ আগস্ট)। ১৯৩৫ সালের এই দিনে ফেনী জেলার সোনাগাজি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।   

১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি বড় ভাই শহীদুল্লা কায়সারকে মিরপুরে খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হন জহির রায়হান। এরপর আর ফিরে আসেননি তিনি। মাত্র ৩৬ বছরের জীবন পেয়েছিলেন, তাতেই নিজেকে অনন্য করে রেখেছেন জহির রায়হান। অনবদ্য সৃজনালোয়ে তিনি উজ্জ্বল হয়ে বেঁছে থাকবেন বাঙালির স্মৃতি-সত্তায়।

জহির রায়হান ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি চলচ্চিত্রে নাম লেখান ১৯৫৭ সালে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’র সহকারী পরিচালক হিসেবে। পরিচালক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় ১৯৬১ সালে ‘কখনো আসেনি’ সিনেমা নির্মাণের মাধ্যমে।  

১৯৬৮ সালে জহির রায়হান পরিচালনা করেন রঙিন চলচ্চিত্র ‘সঙ্গম’। ভাষা আন্দোলনের পটভূমিকায় তিনি নির্মাণ করেছিলেন কালজয়ী চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’। চলচ্চিত্রটি দেখে সত্যজিত রায়, মৃণাল সেন, তপন সিনহা এবং ঋত্বিক ঘটক প্রমুখ ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামকে প্রতিপাদ্য করে জহির রায়হান নির্মাণ করেছিলেন ‘স্টপ জেনোসাইড’। এতে তিনি ক্যামেরার চোখে বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন নিরীহ বাঙালির ওপর পাক বাহিনীর বর্বরতার চিত্র। এই নির্মাতা আরো নির্মাণ করে গেছেন ‘সোনার কাজল’, ‘বাহানা’, ‘বেহুলা’ ও ‘আনোয়ারা’র মতো বেশ কয়েকটি নন্দিত সিনেমা।

শুধু চলচ্চিত্রই নয় জহির রায়হান প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন সাহিত্যেও। ১৯৫৫ সালে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘সূর্যগ্রহণ’ ও ১৯৬০ সালে প্রথম উপন্যাস ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’ প্রকাশিত হয়। ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ ও ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাস দুটি তার অনবদ্য রচনা। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলীর মধ্যে রয়েছে- ‘হাজার বছর ধরে’, ‘আর কতদিন’, ‘কয়েকটি মৃত্যু’, ‘বরফ গলা নদী’, ‘তৃষ্ণা’ প্রভৃতি।

কর্মজীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, নিগার পুরস্কারসহ অসংখ্য সন্মাননায় ভূষিত হয়েছেন জহির রায়হান।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।