মৌলভীবাজার: রাস্তা অতিক্রমের সময় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পথে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মরছে বন্যপ্রাণী। দিনের তুলনায় রাতের সময়টাতে বন্যপ্রাণীদের এই মৃত্যুর হার তুলনামূলক বেশি।
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকে যে পিচঢালা পথটি চলে গেছে কমলগঞ্জ উপজেলার দিকে, সেটার একটি অংশে বৃহৎ জায়গাজুড়ে লাউয়াছড়া বনের উপস্থিতি। এখানেই রয়েছে দেশের মূল্যবান জীববৈচিত্র্য।
তবে বন্যপ্রাণীদের এই অনাকাঙ্খিত মৃত্যু প্রতিরোধে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের পক্ষ থেকে।
কিন্তু এই পথ দিয়ে বিচরণকারী গাড়ির চাকায় বিশেষত সিএনজিচালিত অটোরিকশার চাকার নিচে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী।
এই সিএনজি যানের গতি এতো বেশি পরিমাণে থাকে যে রাস্তা পারাপারের সময় যেকোনো বন্যপ্রাণীর গায়ে ধাক্কা লাগা মাত্রই প্রাণনাশের ঘটনা ঘটে।
রোববার (১০ আগস্ট) সকালে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পথে একটি ‘মেছো বিড়াল’ প্রাণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, রাতে দ্রুত গতিতে চলাচল করা একটি সিএনজি অটোরিকশা মেছো বিড়ালটিকে মেরেছে। মুহূর্তে ছটফট করতে করতে এটি প্রাণ হরিয়েছে।
শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী রেঞ্জের ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার কাজী মো. নাজমুল হক বাংলানিউজকে বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের রাস্তায় সর্বোচ্চ গতিসীমা ২০ কিলোমিটার। এই নির্দেশনা আমাদের বিভিন্ন সাইনবোর্ডে আছে।
এই রাস্তায় চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহনের চালকদের সঙ্গে বনবিভাগ, সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় সচেতনতামূলক সভা আয়োজন করা গেলে বন্যপ্রাণী রক্ষায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তিনি।
মেছো বিড়াল নিশাচর প্রাণী। সচরাচর দেখা যায় না। দিনে ঝোপঝাড়, গাছের প্রশস্ত ডাল ও গর্তে ঘুমিয়ে কাটায়। রাতের বেলা জলাশয়ের আশপাশে বিচরণ করে। সারা বিশ্বে মেছো বিড়াল এখন সংকটাপন্ন প্রাণী। প্রাণীটি বাংলাদেশেও বিপন্ন। প্রাকৃতিক জলাভূমি এবং ঝোপঝাড় কমায় প্রাণীটির সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) মেছো বিড়ালকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।
বিবিবি/আরএইচ