ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

না.গঞ্জের পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজন সমন্বিত প্রয়াস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৩
না.গঞ্জের পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজন সমন্বিত প্রয়াস

নারায়ণগঞ্জ : এক সময়ে বিদেশ থেকে পণ্যবাহী জাহাজ নারায়ণগঞ্জে এসে ফেরত যাওয়ার সময়ে শীতলক্ষ্যার স্বচ্ছ সুপেয় পানি নিয়ে যেতো। মানুষ শীতলক্ষ্যার নির্মল বাতাসের জন্য ছুটে আসতো এ নদীর তীরে।

কিন্তু সেই নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ এখন মারাত্মকভাবে দূষণের শিকার হচ্ছে। নদী দূষণ, বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণে অতিষ্ট নারায়ণগঞ্জবাসী। এ অবস্থা উত্তরণে নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনতাকে এক প্লাটফরমে এসে সমন্বিত প্রয়াস নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী আন্দোলনের নেতারা।

শনিবার নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেড মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত ‘নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ সমস্যা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ অভিমত দেন তারা।

বৈঠকের শুরুতে নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ দূষণ, নদী দখল, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণের চিত্র তুলে ধরে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাপা’র নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটির সদস্য সচিব শরীফউদ্দিন সবুজ। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাপা’র নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক এবি সিদ্দিক।

গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জে দূষণ রোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শীতলক্ষ্যা দূষণ রোধ করতে ডাইং কারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মের আওতায় আনতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুল হাই বলেন, নদী দূষণ রোধ করতে পারলে নারায়ণগঞ্জের দৃশ্যপট বদলে যাবে। এজন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস বলেন, ডাইং কারখানা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে কখনোই নদী দূষণ বন্ধ হবে না। আর নদী দূষণ বন্ধ করা গেলে অন্য দূষণও কমে যাবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন নির্ভীকের প্রধান সমন্বয়ক এটিএম কামাল বলেন, সব ধরনের দূষণ রোধে কেবল গোলটেবিল বৈঠক করলেই চলবে না। পাড়া মহল্লায় গিয়েও মতবিনিময় করতে হবে, জনগণকে আগে সচেতন করা প্রয়োজন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সহ-সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির বলেন, পরিবেশ ঠিক রাখতে জনসভা করতে হবে। এটা হবে আন্দোলনের একটি সূচনা। ওই সভায় সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

বিএনপি নেতা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, শহরের ৫নং ঘাট এলাকার মাছঘাটের এত নোংরা পরিবেশ যে, এতে করে মানুষজন এখন আর শীতলক্ষ্যার তীরে যায় না। মানুষ ওই মাছঘাটের কারণে নির্মল বাতাস গ্রহণ করতে পারছে না।

মানবাধিকার আইনজীবি ফোরাম নেতা খলিলুর রহমান বলেন, শহরের মীর জুমলা সড়ক ও খানপুরে বিআরটিসি ডিপোর পাশে ময়লা স্তুপের কারণে ওইসব এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জোনের উপ-পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ ভূঁইয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় অনেক অভিযান তারা ঠিকমত পরিচালনা করতে পারছেন না। তবে আগামী জুন মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের অনেক ডাইং কারখানা ইটিপির আওতায় চলে আসবে।

গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি এম এ হাতেম, বাপা’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক খান, অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন, জিয়াউল হায়দার কাজল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস এবং নারী প্যানেল মেয়র শারমিন হাবিব বিন্নী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময় : ১০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৩
টিএইচ/এইচএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।