ঢাকা: একদিকে মুম্বাই, দিল্লি, চেন্নাইয়ে সম্পদের জৌলুস, অপর দিকে বিহার ঝাড়খন্ডের গ্রামগুলোতে দরিদ্রের হাহাকার। বিশ্বের উদীয়মান শক্তি হিসেবে মর্যাদার দাবিদার একবিংশ শতাব্দীর ভারতের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিপরীতে এ যেন অনেকটা প্রদীপের নিচেই অন্ধকার।
পরমাণবিক শক্তি ও আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র অর্জনে সক্ষম হলেও ভারতের অধিকাংশ মানুষই আজ পৃথিবীর গড় দারিদ্র্যের সীমারেখার নিচে অবস্থান করছে।
ভারতের ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অরগানাইজেশনের (এনএসএসএ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই চিত্রই উঠে আসে। রাষ্ট্রীয় জরিপ পরিচালনাকারী এই সংস্থার সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের গ্রামীণ এলাকায় বসবাসরত ৬০ শতাংশ মানুষই দৈনিক সর্বোচ্চ মাত্র ৩৫ রুপিতে জীবন ধারণ করে। শহরাঞ্চলেও কম বেশি একই চিত্র। এখানেও কমবেশি ৬০ শতাংশ ভারতীয় নাগরিকের গড় জীবন নির্বাহের খরচ দৈনিক ৬৬ রুপিতে সীমাবদ্ধ।
সংস্থার মহাপরিচালক জে দাশ সংবাদমাধ্যমের সামনে এক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য উপস্থাপন করেন।
জুলাই ২০০৯ থেকে শুরু হয়ে জুন ২০১০ সাল পর্যন্ত চলতে থাকা ৬৬ তম ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভের (এনএসএস) জরিপে এ পরিসংখ্যান প্রকাশ পায়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিকদের মান্থলি কনসিউমার এক্সপেনডিচার (এমপিসিই) বা জীবনধারণের জন্য মাসিক গড় ব্যয়ের পরিমান হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে ১ হাজার ৫৪ রুপি এবং শহরাঞ্চলে ১ হাজার ৯৮৪ রুপি।
তবে এর মধ্যে ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র দশ শতাংশ মানুষের অবস্থা আরোও বেশি শোচনীয়। দৈনিক ১৫ রুপিরও কম অর্থে জীবন ধারণ করতে বাধ্য হন এই দশ শতাংশ মানুষ। পক্ষান্তরে শহর এলাকায় বাসকারী নাগরিকদের সবচেয়ে দরিদ্র দশ শতাংশ জীবন ধারণ করেন দৈনিক ২০ রুপিতে।
এনএসএসও’র জরিপে আরো দেখা যায় যে ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে গড় এমপিসিই সবচেয়ে কম বিহার ও ছত্তিশগড়ে, মাত্র ৭৮০ রুপি। এর পরই ওরিষ্যা ও ঝাড়খন্ডের অবস্থান। এই দুই রাজ্যের গড় এমপিসিই ৮২০ রুপি।
ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ গ্রামীণ এমপিসিই কেরালায়, ১ হাজার ৮৩৫ রুপি। অপরদিকে শহরাঞ্চলের এমপিসিই রাজ্যগুলোর মধ্যে মহারাষ্ট্রে সর্বোচ্চ, ২ হাজার ৪৩৭ রুপি।
বাংলাদেশ সময়:১২১৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর