ঢাকা, শনিবার, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৯ জুলাই ২০২৫, ২৩ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

বিপদসংকেত দেবে বাংলার রোবট!

মাহবুব আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:২৭, মে ৮, ২০১২
বিপদসংকেত দেবে বাংলার রোবট!

চট্টগ্রাম : রোবট নিয়ে গবেষণা এবং নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) কাজ শুরু করেছে ‘অ্যান্ড্রোমেডা স্পেস অ্যান্ড রোবটিক রিসার্চ অরগানাইজেশন’ (অ্যাসরো)।  

তড়িৎ কৌশল বিভাগের ১৫ শিক্ষার্থীর অক্লান্ত চেষ্টায় নতুন উদ্যামে ফের যাত্রা করলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা গবেষণা সংগঠন ‘অ্যাসরো’।


 
বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও সংগঠনটির ব্যবস্থাপনা প্রধান শাহরিয়ার হক সাকিব বাংলানিউজকে বলেন, ‘কোনোকিছু বোঝার পর থেকেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিনে উন্নততর প্রযুক্তি দেখে বিজ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ জন্মে। চুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর তা বাস্তবে রূপ দিতে বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ’

সংশ্লিষ্টরা বাংলানিউজকে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি করে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চুয়েটের অবস্থান শীর্ষে তুলে ধরতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে ‘অ্যাসরো’। যুগোপযোগি প্রযুক্তি দিয়ে চুয়েট তথা বাংলাদেশকে আবির-উদ্ভাবনের অনন্য সাধারণ উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়ে সদস্যরা এগিয়ে যাচ্ছে।

তরুণদের এ দলটি ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে, পরীক্ষামূলকভাবেও ব্যবহার করা হচ্ছে এর একটি অংশ।

গত ৬ এপ্রিল বন্দরনগরীর ফুলকিতে এক অনুষ্ঠানে অ্যাসরোর ‘রোবটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন’ শিরোনামে একটি প্রকল্প প্রদর্শন করা হয় বলে জানান সাকিব।

প্রদর্শনী বিষয়ে তিনি জানান, নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দিয়ে দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছে দুর্বার পথে চলা অভিযাত্রিকদের এ দলটি। একের পর এক প্রকল্প দেখার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীরা অধীর আগ্রহে জেনে নিয়েছেন প্রকল্পগুলোর ব্যবহার বিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়। এমনকি প্রযুক্তিটি স্পর্শ করে দেখতেও ভুলেননি প্রযুক্তিমনারা।

সংগঠনটির গবেষণা কার্যক্রম ও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করতে ড. কুদরত-ই-খুদা হলের দু’তলায় এক ল্যাবরেটরি স্থাপন করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে সেখানে গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ নেই বলে জানান তারা।
 
তড়িৎ কৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আহসান উল্লাহ্ এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে জানান, প্রকল্পগুলোর মধ্যে জেন্ডার অ্যান্ড ভয়েস কন্ট্রোলড্ রোবট, জিএসএম বেজড স্মার্ট হোম সিকিউরিটি সিস্টেম, মাইক্রোকন্ট্রোলার প্রোগ্রামার, রিমোটকন্ট্রোল রোবটিক কার, ডিটিএমএফ (ডুয়্যাল টোন মাল্টিপল ফিক্যুয়েন্সি) হোম অটোমেশন সিস্টেম, ডিজিটাল থার্মোমিটার উইথ ডাটা লগার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্ট কাউন্টার, কন্টাক্টলেস টেকোমিটার, লাইন ফলোয়ার রোবট, টেম্পারেচার বেইজড অটোমেটিক ফ্যান স্পিড কন্ট্রোলিং সিস্টেম এবং ডিজিটাল পাওয়ার সাপ্লাই খুব নিপুণভাবে তৈরি করেছে শিক্ষার্থীরা।

রোবটগুলোর কাজ সম্পর্কে শিক্ষার্থী হাসিবুল জামিল বাংলানিউজকে জানান, জিএসএম বেজড স্মার্ট হোম সিকিউরিটি সিস্টেম দিয়ে আগাম বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সংকেত জানাবে এ রোবট।

ডিজিটাল থার্মোমিটার উইথ ডাটা লগার দিয়ে আবহাওয়ার বিভিন্ন তথ্যাদি জানা যাবে। এছাড়াও অন্যান্যগুলোও কোনো না কোনভাবে মানব কল্যাণে ব্যবহার করা যাবে বলে জানান তিনি।

এদের ব্যবহার সর্ম্পকে তিনি জানান, সবগুলোই রিমোট কন্ট্রোল ও হাতের ইশারায় চালানো সম্ভব।

প্রকল্পগুলো দেখে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে ড. আহসান উল্লাহ্ আরও বলেন, ‘গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। আর তা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরাই সফলভাবে পরিচালনা করছে। ’

সুযোগ পেলে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই প্রকৌশলী।

অন্যদিকে যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক ড. সজল চন্দ্র বণিক তরুণদের এ গবেষণার প্রশংসা করে বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে অনেকগুলো প্রজেক্টের কাজ করেছে ভবিষ্যতের এই প্রকৌশলীরা। ’

‘অ্যাসরো’তে বর্তমানে তড়িৎ কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা কাজ করলেও অন্যান্য বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরাও ইচ্ছে করলেই নিজেকে যুক্ত করতে পারবে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা প্রধান মো. শাহরিয়ার হক।

বর্তমানে সংগঠনটি চুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্যে ‘হ্যন্ডস্ অন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড মাইক্রোকন্ট্রোলার’ শীর্ষক একটি মুক্ত কোর্সও পরিচালনা করছে।

এছাড়া ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনটির শাখা রয়েছে বলে জানান সংগঠনের ব্যবস্থাপনা প্রধান শাহরিয়ার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১২
সম্পাদনা: ওবায়দুল্লাহ সনি, নিউজরুম এডিটর‘ আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।