যশোর: ফাল্গুন-চৈত্র মাসের মৌসুমী সবজি সজিনা ডাটা এখন সারা বছরই পাওয়া যাবে।
ইতোমধ্যে, যশোর হর্টিকালচার সেন্টার বারোমাসি এ সজিনার চারা উৎপাদন ও বিতরণ শুরু করেছে।
পরীক্ষামূলকভাবে যশোরের বিভিন্ন এলাকায় রোপণ করা গাছে সজিনা ডাটার ফলনও শুরু হয়েছে।
যশোর হার্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, গবেষণার মাধ্যমে চট্টগ্রামের রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র বারোমাসি সজিনার এ জাতটি উদ্ভাবন করে সফল হয়েছে।
গবেষণা কেন্দ্রের ফর্মুলা অনুযায়ী, যশোর হর্টিকালচার সেন্টারে সজিনার চারা উৎপাদন ও বিতরণ শুরু হয়েছে।
বসতবাড়ির আঙিনা ও বাণিজ্যিকভিত্তিতে ক্ষেতখামারে এই সজিনা চাষ করা যাবে। `পিকেএস-২` জাতের এই সজিনার চারা কৃষিক্লাবের সদস্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকার কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
যশোর হর্টিকালচার সেন্টার থেকে প্রতিটি চারা ১০ টাকা মূল্যে ইতোমধ্যে ৭ হাজার চারা বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে ২ হাজার চারার মজুদ রয়েছে। আরও ৫ হাজার চারা উৎপাদন করা হচ্ছে।
উদ্যানতত্ত্ববিদ আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে আরও জানান, বারোমাসি এ সজিনা চারা লাগানোর ৬ মাসেই গাছে ডাটা ফলবে এবং সারা বছরই তা পাওয়া যাবে।
একটি পূর্ণ বয়ষ্ক গাছে বছরে ১ হাজার ৬০০টি পর্যন্ত সজিনার ফলন হবে। সাধারণত ২০টি ডাটায় ১ কেজি সজিনা পাওয়া যাবে। এ হিসাবে একটি গাছে ২ মণ সজিনা ডাটার ফলন সম্ভব।
একটি গাছ থেকে ৬ হাজার ৪শ টাকা আয়ের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে চাষ করলে ১ বিঘা জমিতে ৪০টি গাছ রোপন করে বছরে ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, সজিনার চারা রোপনে উৎসাহ যোগাতে ইতোমধ্যে যশোরের কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে প্রায় ১ হাজার চারা বিতরণ করা হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের আবদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তিনি তার বাড়িতে ১০টি সাজিনার চারা লাগিয়েছেন। গাছগুলোতে ডাটা ধরা শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, সজিনা গাছের তেমন একটা পরিচর্যার প্রয়োজন নেই। শুধু গরু-ছাগলের উপদ্রব ঠেকানো সম্ভব হলেই গাছগুলো বেড়ে ওঠে এবং তাতে ভালো ফলন হয়। সার ও কীটনাশক ব্যবহারেরও প্রয়োজন হয় না।
যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের এক চিকিৎসক বাংলানিউজকে জানান, হৃদরোগ, রক্তের প্রবাহবৃদ্ধি, টাইফয়েড, প্যারালাইসিস, বাতজ্বর ও লিভারের জন্য সজিনা অনেক উপকারী।
এছাড়াও পোকামাকড়ের কামড়ে অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে সজিনা পাতার রস। সজিনার বাকল, শেকড়, ফুল, বীজ এবং এ গাছের আঠাতেও ওষুধি গুণ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১২
সম্পাদনা: ফরহাদ খান, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আ্উটপুট এডিটর