ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

টুপি বানাতে ব্যস্ত কারিগররা

দেলোয়ার হোসেন বাদল, সিনিয়র ফটোকরেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৪
টুপি বানাতে ব্যস্ত কারিগররা টুপি বানাচ্ছেন কারিগররা। ছবি: ডিএইচ বাদল

রমজান মাসের শুরু থেকেই টুপি বানানোর ধুম লেগে যায় টুপি কারখানাগুলোতে। আর সেই কাজ চলে চাঁদরাত পর্যন্ত।

শিফট অনুযায়ী টানা ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে থাকেন টুপির কারিগররা। সেই সঙ্গে দেশের সব অঞ্চলের পাইকারী দোকানগুলোতে টুপি সরবরাহ করেন কারখানার মালিকরা। বিশেষ করে রমজান মাসের শবে কদরে ও ঈদের আগের দিন টুপির চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। বড় মানুষের টুপির পাশাপাশি ছোটদেরও টুপি বিক্রি হয়ে থাকে সমান তালে।

সম্প্রতি রাজধানীর চকবাজার উর্দুরোড ও কেরাণীগঞ্জের কামরাঙ্গীচরে কয়েকটি টুপি কারখানা ঘুরে দেখা যায় টুপি কারিগরদের ব্যস্ততা।

কারখানায় নারী ও পুরুষ সবাই কাজ করে চলেন। তারা যেন দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না। কেউ কাপড় কাটছেন, কেউবা সেলাই করছেন। আবার কয়েকজন টুপিগুলো প্যাকেট করছেন বিক্রির জন্য।

কামরাঙ্গীচর মোমিনবাগ এলাকার আল-সাইফ ক্যাপ প্রোডাক্টসের মালিক সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে নারী ও পুরুষ সবাই টুপি বানানোর কাজ করেন।  তাদের পরিশ্রম কম হওয়ার জন্য আমি দুই শিফট চালু করেছি। সারা বছর কাজ করেন তারা।  রমজান মাস এলে একটু কাজের চাপ পড়ে। তাই শিফটে কাজ করাই তাদের দিয়ে। বিনিময়ে তাদের অতিরিক্ত মজুরিও দিই। কারিগররা হলো আমাদের সম্পদ। তাদের ভালো রাখার দায়িত্ব কিন্তু কারখানার মালিকদের। আমাদের এখানে বিভিন্ন কারুকাজের টুপি বানানো হয়। এই টুপিগুলো শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বিক্রি করা হয়। দামেও রয়েছে ভিন্নতা।

কারখানার কারিগর আলামিন বাংলানিউজকে বলেন, কারখানার কাজ থাকলে ভালো লাগে। আমাদের সংসারতো কাজের বিনিময়ে চলে। কাজ না থাকলে খাবো কী? তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন আমাদের বানানো টুপি মাথায় দিয়ে মানুষ নামাজ পড়তে যায় বা বিদেশে পাঠানো হয়।

শিউলি বেগম নামে এক নারী কারিগর বলেন, আমি এখানে কাজ করছি প্রায় পাঁচ বছর হলো। এখানে কাজ করেই আমি সংসার চালাচ্ছি। কাজের পরিবেশ ভালো। আমরা সবাই সময় মতো পারিশ্রমিক পাই। আর এখন রমজান মাস উপলক্ষে অতিরিক্ত কাজ হচ্ছে কারখানাতে, তার জন্যও আলাদা পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে।

আল-মদিনা ক্যাপ হাউজ, সোয়ান ক্যাপ, শাওন ক্যাপ হাউজসহ আরও কয়েকটি টুপির কারখানা ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়। সবাই দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে, বিদেশে টুপি বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে।

কারখানার মালিকরা বলেন, সরকার আমাদের খোঁজখবর নেন না। এখানে হাজার হাজার কারিগর শ্রমিক কাজ করেন। আমরা চেষ্টা করি, কিছুটা বেকারত্ব দূর করতে। সরকার আমাদের এই শিল্পটার দিকে নজর দিলে আমাদের বানানো টুপি ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানি করতে পারতাম। আর বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের বেকারত্ব দূরসহ উন্নয়নে আরও পাশে থাকতে পারতাম।

রাজধানীর গুলিস্তানের বায়তুল মেকাররম এলাকার খুচরা টুপি বিক্রির দোকানগুলোও ভিড় দেখা যায়। এখানে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ ৫০০/৬০০ টাকার টুপি বিক্রি হয়ে থাকে। সারা বছর টুকটাক বিক্রি হলে শবে বরাত, শবে কদর, ঈদ এলে টুপির বিকিকিনি বেড়ে যায় বলে জানান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।