ঢাকা, সোমবার, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ জুলাই ২০২৫, ২৫ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

জাবিতে বিতর্ক উৎসবে মুখোমুখী ছাত্র ও শিক্ষকরা

ওয়ালিউল্লাহ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০৯, অক্টোবর ৬, ২০১২
জাবিতে বিতর্ক উৎসবে মুখোমুখী ছাত্র ও শিক্ষকরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এক্সিম ব্যাংক জাতীয় বিতর্ক উৎসবের’ উদ্বোধনী পর্বে অনুষ্ঠিত হলো ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে বিতর্ক প্রতিযোগীতা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেট অর্গানাইজেশন আয়োজিত এ বিতর্ক প্রতিযোগীতার বিষয় ছিল ‘স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিঠ ওপি’।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগীতায় ছাত্ররা বলেছেন, শিক্ষকরা জ্ঞানবৃদ্ধ, বয়োবৃদ্ধ। তারা অভিজ্ঞ। তাই তারা গুরু আর আমরা শিষ্য। আমরা আমাদের অজ্ঞচোখে বর্তমানকে যেভাবে দেখি, সেটাই হচ্ছে এপিঠ। এপিঠে আমরা দেখি ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে সম্পর্কে ফাটল। সক্রেটিস-প্লেটোর সময়ে গুরুশিষ্যের মাঝে যে সম্পর্ক ছিল তা এখন দেখা যায় কি না অভিজ্ঞরা জবাব দিবেন। বিশ্ববিদ্যালয় হলো যেখানে বিশ্বজনীন চিন্তার বিকাশ হয়। শিক্ষকরা তা শেখাবেন। আমরা শিক্ষকদের ক্লাসেই শুধু নয় ক্লাসের বাইররেও পাশে পেতে চাই।

অনুষ্ঠানে শিক্ষকরা বলেন, আমরা নিজেদের বয়োবৃদ্ধ মনে করি না। আমাদের তারুণ্য আছে। আর জ্ঞানবৃদ্ধও নয়। কারণ বিশ্বজোড়া পাঠশালায় সবার ছাত্র আমি। আরেকজন শিক্ষক বলেন, আসলে ওপিঠের সাথে বর্তমানের অনেক বদল হয়েছে। আর গুরু শিষ্যের কথা আমরা স্বীকার করি না। কারণ গুরু শব্দটি একটি ঔপনিবেশিক বিষয়। কারণ অত্যন্ত কঠোর ভাবে শিক্ষা দেন গুরুরা। যেটা সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা গুরু শিষ্যের বন্ধুত্ব চাই।

বিতর্ক প্রতিযোগীতায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আনোয়ার হোসেন। শিক্ষকদের মাঝে বিতর্ক করেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক একেএম শাহনেওয়াজ, সহযোগী অধ্যাপক স্বাধীন সেন ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রেজোয়ানা করিম স্নিগ্ধা। ছাত্রদের মধ্যে বিতর্ক করেন জাকারিয়া পলাশ, জাফর সাদিক ও ফারাহ নাজ নাহার ফিবা।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। এখানে এভাবে বিতর্কের মাধ্যমেই জ্ঞান বিকাশ করা যায়। উপাচার্য সে সময় চারদিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

স্বপ্নের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে ‘বুনি স্বপ্নের নীড়/ যুক্তি কথায়, সুনিবিড়’ এই স্লোগান নিয়ে সারাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বর্তমান ও সাবেক বিতার্কিকদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়, ২০টি কলেজ এবং ৩০টি স্কুলের দুই শতাধিক বিতার্কিক অংশগ্রহণ করেছে।

শুক্রবার অনুষ্ঠানে বিতর্ক কর্মশালা, বিতর্ক বিষয়ক সেমিনার, আন্ত:স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বারোয়ারী বিতর্ক, পাবলিক স্পিকিং অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিতর্ক উৎসবকে আরো প্রাণবন্ত করতে ছাত্র-শিক্ষক বিতর্ক, আঞ্চলিক, রম্য বিতর্ক এবং স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের অংশগ্রহণে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রদর্শনী বিতর্ক।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বিতর্ক চর্চা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ‘৫ম আন্ত:হল বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০১২’। এ সকল আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দ্বীন মুক্তমঞ্চ ও জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১২
সম্পাদনা: শেরিফ সায়ার, বিভাগীয় সম্পাদক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।