ঢাকা, সোমবার, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ জুলাই ২০২৫, ২৫ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

বন্ড, জেমস বন্ড

স্বপ্নযাত্রা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০৯, অক্টোবর ৬, ২০১২
বন্ড, জেমস বন্ড

মাই নেম ইজ বন্ড, জেমস বন্ড। এ ডায়লগ দিয়ে বিশ্বব্যাপী মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন ‘জেমস বন্ড’ চরিত্রটি।

৫ অক্টোবর শুক্রবার জেমস বন্ড সিরিজের পঞ্চাশ বছর পূর্তি। ১৯৬২ সালের এ দিনেই ‘ডা. নো’ নামে চলচ্চিত্রটি দিয়েই জেমস বন্ড চরিত্র পথ চলা শুরু করে। বিখ্যাত এ চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন সিন কোনারি।

স্কটল্যান্ডের এক হতদরিদ্র পরিবারে কোনারির জন্ম। মা ছিলেন ক্লিনার। আর বাবা লরি ড্রাইভার। শৈশবে অভাব অনটনের মধ্যে দিয়েই কোনারি বেড়ে উঠেন। জন্মের পর থেকে বাবা-মায়ের আদর নয়, বরং অনেকটা অবহেলা দিয়েই শৈশব শুরু।

এরপর মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি দুধ বিক্রেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন। কবছর যেতেই ১৯৪৬ সালে তিনি রয়েল নেভিতে কাজ শুরু করেন। এর ঠিক তিন বছরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার শরীরে আলসারের জীবাণু পাওয়া যায়। রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে কোনারিকে নেভি থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।

জীবনযুদ্ধে দুমড়ে-মুচড়ে যান কোনারি। তারপরও ভাগ্য ফেরানোর আশায় বিভিন্ন সময় ইট ভাঙার কাজ, লাইফ গার্ড হিসেবেও পরিশ্রমের কাজ করে গেছেন। তবে এতসব কিছুর পরও কোনারি প্রতিদিন ব্যায়াম করতেন। নিজের শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখাতে তিনি ছিলেন সদাসচেষ্ট।

এর ফলে ১৯৫৩ সালে মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় নাম লেখান। এখানেই ভাগ্য বদলে যায় কোনারির। ভাগ্য দেবতা যেন তার দিকে ফিরে তাকালেন। অসহায় গরীব কোনারি মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন।

কোনারি ছিলেন ভালো ফুটবলার। কথিত আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাকে দলে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন বয়স ২৩। এতো কম বয়সে ফুটবল খেলোয়াড় না হয়ে তিনি অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট হলেন।

শুরুতে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিজ্ঞাপনে মডেল হলেন। তারপর থিয়েটারে গিয়ে নাটকে কাজ করলেন। থিয়েটার নাটকে চরিত্র পাওয়া খুব কঠিন। তাই তিনি ব্যাকস্টেইজে অন্য শিল্পীদের সহযোগিতা করতেন। মাঝেমধ্যে ছোট ছোট চরিত্রে কাজ করারও সুযোগ পেতেন।

১৯৫৭ সালে বি গ্রেড চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেলেন সিন কোনারি। একজন গ্যাংস্টার হিসেবে ‘নো রোড ব্যাক’ ছবিতে কাজ করেন। এরপর একই বছর ‘হেল ড্রাইভার’ নামে আরেকটি ছবিতে কাজ করেন। এ ছবিটির কাজ দেখেই বন্ড চরিত্রটির জন্য তাকে ডাকা হয়। জেমস বন্ড সিরিজের লেখক ইয়ান ফ্লেমিং স্ক্রিনিংয়ে কোনারিকে প্রথম দেখায় বলে ফেলেন, বন্ড চরিত্রটি আমি এ লোকটির জন্যই সৃষ্টি করেছি। আমি আর কাউকে দেখতে চাই না। এ ছেলেটিই জেমন বন্ড।

জেমস বন্ড সিরিজের চারটি ছবিতে অভিনয় করেছেন সিন কোনারি। তিন বছরের চুক্তিতে তিনি রাজি হননি। তাই পরে তিনি বন্ড চরিত্রটি ছেড়ে দেন। কিন্তু ততদিনে ‘ডা. নো’ করে বিশ্বব্যাপী মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন জেমস বন্ড।

কোনারিকে বহুবার পরিচালক অনুরোধ করেছেন এ চরিত্রটি করে যাওয়ার জন্য। কিন্তু চুক্তি ও বেতনভিত্তিক চলচ্চিত্রে তিনি রাজি ছিলেন না। পরে তাকে পাঁচ মিলিয়ন ডলার বেতন দেওয়ার কথাও উঠে। এসব কিছুকে পেছনে ফিরে সিন কোনারি জেমস বন্ড চরিত্রটি ছেড়ে চলে ‍যান। কিন্তু এ‍ চরিত্রটিকে জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক করে তোলেন সিন কোনারি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১২
সম্পাদনা: শেরিফ আল সায়ার, বিভাগীয় সম্পাদক/ সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।