ফকির আলমগীরের গাওয়া একটি গান আছে, ‘মায়ের একধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম, পাপোশ বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না আমার মা...’ এই দৃশ্যটি সেই অসাধারণ গানটির কথা মনে করিয়ে দেয়। মাতৃদুগ্ধ-ঋণ শোধ হবার নয় কখনোই, তারপরেও মায়ের ঋণ শোধানোর অক্ষম চেষ্টাই বলি আর মাযের প্রতি অকল্পনীয় শ্রদ্ধার নিদর্শনই বলি-- ঘটনা সত্য যে নিজ মাকে কাঁধে তুলে নিয়ে তীর্থে এসেছেন এই ব্যক্তি।
মক্কায় হজ করতে যাওয়াদের অনেকেই এবার এই অসাধারণ দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। হ্যাঁ, ছবির এ দৃশ্যটি তাই। এক ব্যক্তি তার পঙ্গু মাকে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মায়ের হজ পালনের সুবিধার্থে। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধার অনন্য এই নিদর্শন চোখের সামনে দেখে আবেগে হাজি সাহেবদের অনেকেই চিৎকার করে কেঁদে ওঠেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যে সন্তান মাকে কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তিনি নিজেও প্রায় বৃদ্ধ!
সৌদি আরবের আরবি দৈনিক কাবার জানায়, মক্কায় হজব্রত পালন করতে আসা অন্যান্য লাখ লাখ পুণ্যার্থীর মাঝে ওই ব্যক্তিকে দেখা যায়— কষ্ট সত্ত্বেও পরম যত্নে ভীড় ঠেলে এগিযে যাচ্ছেন, তার কাঁধের ওপর সামনে দিয়ে দু’পা ছড়িয়ে বসে দুই হাতে মুনাজাত ধরে রেখেছেন মা। মা জননী পঙ্গু এবং একই সঙ্গে বয়সের ভারে ন্যুব্জ। ছেলে হেঁটে যাচ্ছেন এমনভাবে যাতে মায়ের বিন্দুমাত্র কষ্ট না হয়।
পাশে থাকা একজন হাজি সাহেব ভাবাবেগ ধরে রাখতে না পেরে চিৎকার করে উঠলেন, তাকে অনুসরণ করলেন আরও কয়েকজন। যদিও হজব্রত পালনের কঠিন ওই সময়টায় কেউ কারও দিকে তাকানোর ফুরসতে থাকেন না, তারপরেও মায়ের প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার এই অসাধারণ উদাহরণ দেখে অনেকেরই গতি শ্লথ হয়েছে, আবেগে আপ্লুত হয়েছেন নিজ নিজ মায়ের প্রতি কর্তব্য কতটুকু পালন করেছেন তা ভেবে।
এদিকে, হজব্রত পালনে আসা ওই মা-ছেলের নাম পরিচয় জানা যায়নি তাৎক্ষণিকভাবে, তবে কেউ একজন ছবিটি তুলে রেখেছিলেন।
এ দৃশ্য দেখে আপনার মনে পড়তেই পারে মহানবীর (সা.) সেই বাণীটি, “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ২৯ অক্টোবর, ২০১২
সম্পাদনা: একে