বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার। নেতৃত্ব তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি।
এ প্রজেক্টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বাবলম্বী’। এ প্রজেক্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারের শিক্ষার্থীরা কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে বস্তিগুলোতে সেবামূলক কর্মসূচি চালায়।
কথা হয় শাহরিয়ার ইমামের সঙ্গে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের ২য় বর্ষের ছাত্র। লিডারশিপ প্রোগ্রামের প্রতিটি গ্রুপেই প্রতি সপ্তাহে একজন করে দলনেতা নির্বাচিত করা হয়। এই সপ্তাহে দায়িত্ব পেয়েছিলেন শাহরিয়ার। তিনি বাংলানিউজকে জানান, স্বাবলম্বি প্রজেক্টের মাধ্যমে বস্তিগুলোতে বিরিয়ানির প্যাকেট বানানো শেখানো হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা স্বাবলম্বি হতে চেষ্টা করবে।
তবে এ প্রোগ্রামের আওতায় ছিল শুধুমাত্র মহিলারা। এ কথা বলতে গিয়ে শাহরিয়ার জানান, বস্তির পুরুষরা সবসময় নানা ধরনের কাজে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু মহিলারা ঘরে অলস সময় কাটায়। এর মাধ্যমে মহিলারা আয়ের একটি পথ পেতে পারে। তবে সেটা নির্ভর করবে তাদের ইচ্ছার উপর।
একঝাঁক তরুণের এ চেষ্টা প্রশংসা করার মতো বটেই। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল শুধুমাত্র প্যাকেট বানানোর প্রক্রিয়াই শেখানো হয় না। এটি যেহেতু খাবারের প্যাকেট, সেজন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে কথা বলতেও ভুলেনি তারা। এমনকি প্যাকেট তৈরির পর পরিস্কার জায়গায়, ধুলোবালি থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
প্যাকেট তৈরি করেই কাজ শেষ নয়। পরের ধাপগুলো সম্পর্কে শাহরিয়ার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা স্থানীয় কয়েকটি হোটেলের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের এ প্যাকেটগুলো সেখানে বিক্রি করার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। হোটেলগুলোও আগ্রহ দেখিয়েছে।
এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কামরুল হাসান বলেন, ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারে কাজ করলে শুধু যে দেশের সেবা করা হয় তা নয়। একইসঙ্গ নিজের ব্যক্তিগত জীবনেও কাজে আসে। যেমন, সময় সম্পর্কে সচেতন হওয়া, নৈতিকতা, নিষ্ঠার সাথে কাজ করা, নেতৃত্বের ক্ষমতা তৈরি হওয়া। এগুলো নিজের জীবনের ধারাকেই পাল্টে দিতে পারে।
প্রজেক্ট স্বাবলম্বির সমন্বয়কারি রাকিবা রহমান নিটোল বলেন, বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার থেকে যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারা এখান থেকে বের হয়ে চুপ করে বসে থাকে না। তাদের নিজেদের মধ্যে তৈরি হয় নেটওয়ার্ক। এরপর সবাই মিলে এগিয়ে যায়।
টিটিপাড়া বস্তি থেকে যখন বের হওয়ার সময় হলো। তখন মনে হলো অসহায় মানুষগুলোর জীবনধারাকে কিছুটা বদলে দিতেই স্বপ্ন দেখছে এ তরুণের দল। তাদের সবার চোখেই স্বপ্ন। একদিন বদলে যাবে তাদের জীবন। একদিন অসহায় মানুষগুলোও নিজেকে সবল ভাবতে শিখবে। এমই স্বপ্ন দেখে তারা।
উল্লেখ্য, প্রতিটি দলকে চার মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রথম দু মাস লিডারশিপ সেন্টারের নিজস্ব অফিসে নেতৃত্বের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ক্লাস নেওয়া হয়। এরপর শেষ দু মাস মাঠ পর্যায়ের সমস্যা নিয়ে কিভাবে কাজ করতে হয় সে বিষয়ে হয় প্রশিক্ষণ। তারই অংশ হিসেবে বিরিয়ানির প্যাকেট বানানো শেখানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১২
সম্পাদনা: শেরিফ সায়ার, বিভাগীয় সম্পাদক