কফি আমরা কমবেশি সবাই এক-আধটু খেয়েছি, আর যারা এর স্বাদ এখনও নেইনি তারা অন্তত নামটা শুনেছেন এবং বস্তুটা কী— তা নির্ঘাৎ জানেন। ক্লান্তি-অবসাদ দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করার কাজে চায়ের মতই বা অনেক ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি আদরণীয় কফি অনেক ধরনের পদ আর স্বাদের হয়ে থাকে।

তবে কফি বিষয়ে এখন যা শুনবেন, তাতে আপনি তাজ্জব হবেন, কিন্তু তাতে এর বাস্তবতায় বিন্দুমাত্র নড়চড় হবে না। ঘটনা থাইল্যান্ডের। সেখানে এক অভিজাত হোটেলে আজকাল হাতির গোবর থেকে তৈরি কফি বিক্রি হচ্ছে ধুমসে আর সেই কফির দামও বেশ আক্রা। এই বিটকেলে কফির একটা রাজকীয় নামও দেওয়া হয়েছে— ব্লাক আইভরি ব্লেন্ড। এটা বানানোর কায়দা-কানুনও নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ।
একাজে পোষা হাতিকে খাওয়ানো হয় কফির ফল। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে কাচা কফি ফলগুলো খাওয়ার পর হাতির পরিপাকতন্ত্রে তা হজম হয়। এরপর লাদার সঙ্গে বেরিয়ে আসে অর্ধ-হজম হওয়া কফি ফল। সেখান থেকে কফিবীজগুলো আলাদা করা হয়। পরে সেই বীজ রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে বানানো হয় ‘সুস্বাদু’ কফি।
যে প্রতিষ্ঠান এই কফি বাজারে এনেছে, তারা বলছে ব্লাক আইভরি ব্লেন্ড কফি হচ্ছে ‘ন্যাচারালি রিফাইন্ড’ অর্থাৎ প্রাকৃতিকভাবে শোধিত। এ ধরনের এক কিলোগ্রাম ন্যাচারালি রিফাইন্ড কফি বীজের দাম ১১০০ ডলার। সে মোতাবেক দুনিয়ার সবেচেয়ে দামি ব্লেন্ডেড কফি-বীনের মধ্যে পড়ছে হাতির নাদানো এই কফি বীচিগুলো।
সংশ্লিষ্ট হোটেল গ্রুপ এ সংক্রান্ত এক গবেষণার উল্লেখ করে জানিয়েছে, হাতির পরিপাকতন্ত্রে থাকা একধরনের এনজাইম কফিতে থাকা প্রোটিন উপাদান ভেঙ্গে দেয়।
এই কফির ঘ্রাণও খুব তেজি আর স্বাদ হচ্ছে লা-জওয়াব— দাবি হোটেলওয়ালাদের।

তবে পশুর মল নির্ভর কফি তৈরির এটাই প্রথম ঘটনা নয়। ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায়ও কফি-ফল খাওয়া সিভেট জাতীয় জাতীয় প্রাণীর মল থেকে বীজ বের করে কফি বানানোর রেওয়াজ রয়েছে। তবে হাতিকে কফি ফল খাইয়ে তার লাদি থেকে বীজ বের করে তা শুকিয়ে বেটে গুড়ো করে কফি বানানোর এই তরিকা উদ্ভাবনের কৃতিত্ব সম্ভবত থাইদেরই। নিউইয়র্কের এক কফি শপে প্রতি কিলো সিভেট কফি ৭৪৮ ডলারে বিক্রি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, ০৮ ডিসেম্বর, ২০১২
একে eic@banglanews24.com