ঢাকা: পেশাদারি অসদাচরণ, সম্পদের তথ্য গোপনসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে শ্রীলংকার প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি শিরানি বন্দরনায়েকে অভিসংশনের (impeachment) মুখে পড়েছেন।
তবে এ ঘটনায় বিরোধী দল শিরানির পক্ষ নিয়েছে।
শনিবার শ্রীলংকা সরকারের একজন পদস্থ কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে ৩টিতে তিনি দোষী প্রমাণিত হয়েছেন বলে গঠিত তদন্ত কমিটিও জানিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে শ্রীলংকার সুপ্রিম কোর্টের প্রথম নারী প্রধান শিরানি কি এখনি পদত্যাগ করবেন নাকি জানুয়ারিতে দেশটির পার্লামেন্টে অভিসংশন তদন্ত রিপোর্টের ওপর বিতর্ক অনুষ্ঠান পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন— তা নিয়ে দোদুল্যমানতা দেখা দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী ও গঠিত ইমপিচমেন্ট (অভিসংশন) কমিটির সদস্য নিমল সিরিপালা ডি সিলভা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের তদন্ত করা প্রথম ৫টি অভিযোগের মধ্যে ৩টিতে তাকে দোষী পাওয়া গেছে।
প্রধান বিচারপতি শিরানি বন্দরনায়েকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে পার্লামেন্ট স্পিকার চমল রাজাপাক্সে ১১ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এর মধ্যে ৭ জনই হচ্ছে সরকারি দলের। কমিটি শিরানির বিরুদ্ধে ওঠা ১৪টি অভিযোগের তদন্ত করছে ধাপে ধাপে।
অপরদিকে, এ ঘটনা দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলেছে। গত শুক্রবার বিরোধী দলীয় সদস্যরা শিরানির বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপের প্রতিবাদে পার্লামেন্ট থেকে ওয়াক আউট করেছেন। একইদিন শ্রীলংকান ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিশাল সমাবেশে প্রধান বিচারপতির পক্ষে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। অ্যাসোসিয়েশন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং মর্যাদা তুলে ধরার জন্য শিরানির প্রশংসা করেছে।
এ প্রসঙ্গে রাজধানী কলম্বোস্থ মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, তারা ইমপিচমেন্ট কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে খুবই সচেতন এবং শ্রীলংকা সরকারকে আইনের শাসন মেনে চলার অনুরোধ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টের দুই তৃতীয়ংশ সদস্যের সমর্থন পাওয়া শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাক্সে বেশ ক্ষমতাধর একজন শাসক। বিরোধীদল এবং শ্রীলংকান ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন মনে করছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব এবং নিজের ক্ষমতাকে আরও সুসংহত মজবুত করার জন্য মাহিন্দা প্রধান বিচারপতিকে অভিসংশনের এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, ০৮ ডিসেম্বর, ২০১২
একে