দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’র সুগভীর সৌন্দর্যই চা বাগান। এখানে রয়েছে নানান বৈচিত্র্য ছড়ানো নয়নাভিরাম দৃশ্যের হাতছানি।
শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র ‘আবহাওয়া পর্যবেক্ষণার’র আবহাওয়া সহকারী দীলিপ বাংলানিউজকে বলেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ১৭৮ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এই বৃষ্টিধারা চা গাছের প্রতিটি পাতা ছুঁয়ে টিলার ঢালু অংশ গড়িয়ে অবশেষে আশ্রয় নিয়েছে লেকের বুকে। বৃষ্টিতে ভরে ওঠা চা বাগানের লেকের এই সৌন্দর্য চোখ জুড়ানো। চা বাগানের টিলা, পাহাড় আর লেক-কে প্রতি মুহূর্তই ভরিয়ে রাখে বৃষ্টিধারার প্রতিটি পরশ। এ যেন চিরসুন্দর অদেখা দৃশ্যের আকর্ষণ! যতই মুগ্ধতা নিয়ে বলা যায় ততই যেন কম হবে!
উঁচু টিলা বা পাহাড়ি জমিতেই মূলত চা আবাদ করা হয়। সূর্যের উত্তাপ সরাসরি যাতে চা গাছে না লাগে তার জন্য চা বাগানে পর্যাপ্ত পরিমাণে লাগানো হয় ছায়াবৃক্ষ। টিলাময় চা গাছ আর ছায়াবৃক্ষের সারি অতিক্রম করে চোখের দৃষ্টি যখন লেকের পানিতে পড়ে তখনই মন আনন্দে ভরে ওঠে। লেকের পানিতে ফুটে থাকা গোলাপী শাপলা দেখে।
চা বাগানের উঁচু টিলার ওপর থেকে এই দৃশ্য উপভোগ করার আনন্দই আলাদা। সারি সারি চা গাছের কার্পেটের মতো দিগন্ত বিস্তৃত সমানভাবে ছড়ানো শোভা নিমেশেই চোখ জুড়ায়। মন জুড়ায়। আর তার ভেতর দিয়ে ওই দূরে বৃষ্টির পানিতে ভরে ওঠা লেক চির-ভালোলাগার ঝংকার তোলে হৃদয়ে।
এই লেকের কোনো কোনো অংশে ফুটে থাকে গোলাপী শাপলার দল। তরঙ্গাকৃতিতে তাদের এমন প্রস্ফুটিত হয়ে জেগে থাকার দৃশ্য আরও বেশি ভালোলাগার জন্ম দেন।
পাহাড়ের ওপর থেকে চা বাগানের লেকের এমন সৌন্দর্য সত্যি বর্ণনার অতীত! এই দৃশ্য দেখতে দেখতে উঁচু টিলা থেকে নিচে নামার আনন্দ চিরদিনের বিস্ময়কর এক অভিজ্ঞতা!
মেঘময় আকাশ আর প্রতিটি বিরামহীন বৃষ্টিধারার মাঝেই লুকিয়ে আছে চা বাগানের এমন অদেখা মুগ্ধতা। চা বাগানে বৃষ্টির জলেভরা লেকের শোভা দেখতে দেখতে যদি হঠাৎ পুরনায় বৃষ্টি চলে আসে – তবে সেটা হবে এই পাহাড়-টিলা ভ্রমণের বিস্ময়সূচক এক বাড়তি পাওয়া।
বিবিবি/আরএ