ঢাকা: সামাজিক জীব হিসেবে বিয়ে মানুষের সামাজিকতারই বহিঃপ্রকাশ। প্রণয় বা পারবারিক সম্মতিতে হয়ে থাকে এই বিয়ে।
সংসার টিকিয়ে রাখতে ব্যয় করে নানা পথে। কিন্তু আর ওসব করতে হবে না যারা ইতোমধ্যে ঘর বেঁধে ফেলেছেন বা আগামীতে ঘর বাঁধবেন। তবে এক্ষেত্রে একটু আনুষ্ঠানিকতা করতে হবে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর আপনাদের একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে।
মনে হতে পারে- এ কি গাজাখুরি কথা। আসলে তাই। গবেষণার ফলাফল এমনটিই বলছে। ইলিনয়ের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এ গবেষণাটি চালিয়েছে।
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক এলি ফিনকেল বলেন, “ আমি এটি যাদুর মতো শোনাতে চাই না কিন্তু ন্যূনতম মধ্যস্থতাই খুবই ইতিবাচক ফল পেতে পারেন আপনি। ”
অনলাইনে চালানো জরিপের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণায় অংশ নিয়েছিল ১২০ জুটি। এদের অর্ধেক নিয়মিত প্রতিবেদন লিখেছে।
প্রতিবেদন লেখা গ্রুপের জুটিগুলো দুই বছরে প্রতি চার মাস অন্তর অন্তর তারা সাত মিনিট ব্যাপী একটি প্রতিবেদন লিখতেন অনলাইনে। সম্পর্ক নিয়ে সন্তুষ্টি, ভালোবাস, অন্তরঙ্গতা, বিশ্বাস, আবেগ ও প্রতিশ্রুতি ইত্যাদি বিষয়ে লিখতে হতো জুটিদের। দম্পতিরা পূববর্তী চার মাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ মতানৈক্যের ঘটনাভিত্তিক সারাংশ তুলে ধরেছেন প্রতিবেদনে।
জরিপে অংশ নেয়াদের অধিকাংশ জুটি স্বীকার করেছেন- এই (প্রতিবেদন তৈরি) কৌশলটি কাজে দিয়েছে, মজবুত হয়েছে তাদের সম্পর্ক।
সবার যেন ভালো হয়-এমন মনমানসিকতা নিয়ে নিরপেক্ষ অর্থাৎ তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে যেসব বিষয়ে জুটিদের মতানৈক্য ছিল সেগুলো ভাবতে দেওয়া হয়েছিল।
প্রথম বছর দাম্পত্য জীবন তুলে ধরতে উভয় গ্রুপই অনীহা প্রকাশ করেছে। কিন্তু যারা প্রথমবার প্রতিবেদন লিখেছে তারা দ্বিতীয় বছরের তিনটি প্রতিবেদনই লিখেছে। তিনটি প্রতিবেদন দাখিলকারীদের দাম্পত্য জীবনের অসন্তুষ্টি পুরোপুরি কেটে গেছে।
যদিও উভয় গ্রুপই একই ধরন প্রকট সমস্যার সঙ্গে লড়েছেন তবুও যারা প্রতিবেদন লিখেছেন তারা এই লড়াই কম মর্মপীড়ায় ভুগেছেন যা তাদের দাম্পত্য সন্তুষ্টিকে স্থায়ী করতে সহায়তা করেছে।
ফিঙ্কেল বলেন, “মানুষের জন্য বিয়ে ভালো কিন্তু বিয়ে নামে তথাকথিত কিছুর অস্তিত্বের চেয়ে এর গুণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। “
তিনি আরও বলেন, “উচ্চ গুণ সমৃদ্ধ বিয়ে সুখ এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য শক্তিশালী নিয়ামকগুলোর একটি। এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষিতে, বছরে তিনবার সাত মিনিট লেখার বিষয়টি বিবাহিতদের সেরা বিনিয়োগে পরিণত হয়েছে। ”
কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে দাওয়াত পেলে তো ভালো-প্রতিবেদন লেখার বিষয়টি সহজ হবে। আর যদি না হয় তাহলে আজ থেকে হিসাব রাখুন এবং চার মাস পরে প্রথম প্রতিবেদনটি লিখুন। আশা করি পেয়ে যাবেন এর সাক্ষাৎ ফল।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com