ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

‘আমার শেষ স্মৃতিটা মার কাছে পৌঁছে দিও’

উর্মি মাহাবুব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:২৪, এপ্রিল ২৫, ২০১৩
‘আমার শেষ স্মৃতিটা মার কাছে পৌঁছে দিও’

সাভার থেকে: মৃত্যুকে যখন সামনে থেকে উপলব্ধি করছিলেন তখন ধসে পড়া রানা প্লাজার তিনতলায় আটকে পড়া আয়রন ম্যান দিপঙ্কর ঘোষ বলছিলেন, ‘আমার শেষ স্মৃতিটা মা’র কাছে পৌঁছে দিও। ’

বুধবার বিকাল চারটায় অনেক চেষ্টা করেও যখন দিপঙ্কর বের হতে পারেনি তখন এক উদ্ধারকর্মীর হাতে তুলে দিয়েছে নিজের ব্যবহার করা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ।


 
দিপঙ্করের পরিবারের সন্দেহ এখনো যখন বের হতে পারেনি তার মানে সে এই পৃথিবীতে আর নেই।

দিপঙ্করের চাচা সুদাংশু ঘোষ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলানিউজকে বলেন, “আমি কাল ১০টায় মোবাইলে এই খবর শোনার পর কুষ্টিয়া থেকে এসেছি কেবলমাত্র লাশের আশায়। তবে এসে শুনি ও তখনও বেঁচেছিলো। উদ্ধারকর্মীদের নাকি বলছিলো যে, আমার হাতটা কেটে হলেও আমাকে বের করো। আমি মরতে চাই  না। ”

এদিকে বৃহষ্পতিবার সকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দিপঙ্করকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে সাভারের বাসায় মা গীতা রাণী ঘোষ জ্ঞান হারাচ্ছেন বারবার। গীতা রানীর দুই সন্তানের মধ্যে দিপঙ্করই ছিলো একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

দিপঙ্করের মৃত্যুর আশঙ্কায় দিশেহীন হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার।

দিপঙ্করের চাচা সুদাংশু ঘোষ বলেন, “আর কিছু না হোক ভাতিজার লাশটা যেন গুম না হয়। বৌদি ছেলের মুখটা শেষবারের মতো দেখতে না পেলে হয়তো মরেই যাবে। ”

তিনি আরও বলেন, “আত্মীয়-স্বজনরা বারবার ফোন করছে খবর জানার জন্য। কিন্তু কি বলব!  ভাই মারা যাওয়ার পর কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। আজ এই দৃশ্য দেখতে হবে ভাবিনি। ”

বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এ ভবন ধসের ঘটনায় ১৫৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ১০২ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৩
এআর/আইএ/ইএস/জেএমএ/এনএম/এটি/সম্পাদনা :মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।