ঢাকা, সোমবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

দুই বন্ধু ইথার-নাতাশার ‘আমার আমি’

শেরিফ আল সায়ার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:১৭, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৩
দুই বন্ধু ইথার-নাতাশার ‘আমার আমি’

দুই বন্ধু ইথার এবং নাতাশার সংগীত নিয়ে পথচলা শুরু হয় আড্ডা থেকেই। সব বন্ধুদের সামনেই চলে গান নিয়ে নানান গল্প।

দুজনের আগ্রহের বিষয় সংগীত। আড্ডা থেকেই সংগীত নিয়ে পথ চলতে চলতে ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসেই বের হচ্ছে তাদের প্রথম গানের অ্যালবাম ‘আমার আমি’।

পুরো নাম রুমানা ইয়াসমিন চৌধুরী নাতাশা। এসেছেন চট্টগ্রাম থেকে। এইচএসসি পাশ করার পর ঢাকায় উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হয়েছেন বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি। স্বপ্ন দেখছেন ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার। কিন্তু গানকে ভালোবাসেন। চট্টগ্রাম থাকতেও গানের তালিম নিয়েছেন। নিয়মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান এমনকি চট্টগ্রাম বেতারেও গান গেয়েছেন। ঢাকায় এসে গান থেকে একমুহূর্তও দূরে থাকতে পারেনি। ছায়ানটে নজরুল সংগীতের তালিম নেওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক গান পাগল ছেলে ইথারের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলেও ইথার আখতারুজ্জামান পড়াশোনা করছেন তৈরি পোশাক প্রক্রিয়াজাতকরণ বিভাগে। বন্ধুদের আড্ডাতেই পরিচয়। সেখান থেকেই গান নিয়ে দুজনের পথচলা শুরু।

ইথার বাংলানিউজকে জানান, আমরা একই ব্যাচের শিক্ষার্থী। দুজনই গান ভালোবাসি। আমি ভালোবাসি গান লিখতে। নাতাশা গান গায়। একদিন দুজন বাসে করে ঘরে ফিরছিলাম। মাথায় তখন দুটি লাইন আসলো। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলের নোট অপশনে লাইন দুটি লিখে রাখি। এ বিষয়টি নাতাশা খেয়াল করলো। সে তাৎক্ষণিকভাবে দুটি লাইনের সুর বেঁধে ফেলে। তখন মাথায় আসে আমাদের পথচলা সম্ভব।

ইথার-নাতাশা গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে গান নিয়ে কাজ করতে চেয়েছেন। তাদের স্বপ্নের শুরু আজ থেকে তিন বছর আগে। তখন থেকেই গান লিখছেন ইথার। সেই গানকে জীবন দেওয়া শুরু করেছেন নাতাশা। কিন্তু এভাবে দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তো চলবে না। মানুষকে শোনাতে হবে। গানগুলো কেমন হচ্ছে সে বিষয়েও তো মতামত জরুরী।

ইথার এ বিষয়ে জানান, সোশ্যাল মিডিয়াকেই তখন আমরা বেছে নিই। ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে গানগুলো শেয়ার করি। এছাড়া নাতাশার একটি ব্লগ খুলে দিই। ব্লগে নাতাশা নিয়মিত গান পোস্ট করতে থাকে। তখন থেকেই বন্ধুদের কাছ থেকে ব্যাপকভাবে সাড়া পাই।

এভাবেই গানের সংগ্রহ বাড়তে থাকে।   নাতাশা এ প্রসঙ্গে বলেন, ২০১১ সালের জুন মাসে ‘এয়ারটেল রেডিও ফুর্তি ইয়াং স্টার অব দি মান্থ’ আয়োজনে অনেকটা দুষ্টুমি করেই আমাদের একটি গান জমা দেই। পরে দেখি জুন মাসের জন্য সর্বাধিক ভোট পেয়ে আমাদের গানটিই জয় লাভ করে।

এ বিষয়ে ইথার বলেন, আমাদের খুব ভালো লাগছিল তখন। আমাদের যাত্রাটা মৌলিক সৃষ্টি দিয়েই শুরু হলো।
এভাবেই অনেকটা এলোমেলোভাবে ইথার-নাতাশার গানের সংগ্রহ বাড়তেই থাকে। তাদের গান নিয়ে কাজ শুরু ২০১০ সালে। এবছর ২০১৩ সালে তারা উদ্যোগ একটি অ্যালবাম বের করার। এবারের ঈদে তাদের প্রথম অ্যলবাম বাজারে আসবে “আজব রেকর্ডস”- এর ব্যানারে। অ্যালবামের নাম ‘আমার আমি’।

মোট ১০টি ভিন্ন স্বাদের গান থাকছে এ অ্যালবামে। সব গানই ইথার আখতারুজ্জামানের লিখা। অধিকাংশ গানেরই সুর নাতাশার করা। গানগুলোর সংগীত আয়োজন করেছেন পৃথ্বী রাজ (২টি), ইফতেখারুল আনম (৩টি), সচী সামস্ (২টি), সাজিদ সরকার (৩টি)।

অ্যালবামের নাম কেন ‘আমার আমি’। এমন প্রশ্নের উত্তরে নাতাশা জানান, প্রতিটি সৃজনশীল সৃষ্টিকে ঘিরে থাকে আবেগ, অনুভূতি, স্বপ্ন, হতাশা, সীমাবন্ধতা, প্রত্যাশা। আবার এই সব মিলিয়েও আমার ভেতরে একক একজন ব্যক্তি আছে। সেটিই আমি। এজন্যই ‘আমার আমি’।

ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে নাতাশা বাংলানিউজকে জানান, শুধুমাত্র অ্যালবাম কেন্দ্রিক নয়। ইচ্ছে আছে নিয়মিত প্লে-ব্যাক করা। আমি এমনই স্বপ্ন দেখি। কোন কিছু রাতারাতি হবে না। এমনটি আমি বিশ্বাস করি। চেষ্টা ও সাধনা করে যেতে চাই। নিজের বোধ, রুচি ও মেধাকে সমন্বয় করে ধীরে ধীরে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই।

ছবি: আদিদ আদী এবং নাসিরুল ইসলাম

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।