অফিসের কাজেই ছুটেছিলাম একটি ইন্টারভিউ করতে। হালকা শীতের শান্ত বিকেলে কাজ চলছিল ছাদে বসে।

একটু ভীত নয় সে। যেন বন্ধু হতে এসেছে আমাদের। কারণ স্নিগ্ধ বিকেলের নরম শীতমাখা রোদে প্রকৃতির অসাধারণ এই উপহারের একটা নাম দেওয়া চাই! এমন আদরমাখা চেহারার পাখিটিকে আমরা নাম দিলাম টিয়েবাবু । কারণ দেখলেই তাকে আপনার ইচ্ছে করবে ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুর মতো আদর করতে।

আদর সে নিতেও জানে বটে! প্রথমে আমরা শুধু বনের পাখি ভাবলেও, টিয়েবাবু কিন্তু ভাবলো আমাদের নিজের মানুষ। আমরা তাকে আশ্বস্ত করলাম, ভয় নেই।

আস্তে আস্তে চলে এলো একেবারে কাছে। আমরা প্রথমে অন্যকিছু না পেয়ে ছাদের গাছের ফুল ছিঁড়ে টিয়েবাবুকে আপ্যায়ণ করলাম। সেও মহাখুশি! ফুলগুলি অদ্ভুত সুন্দর ভঙ্গিতে খেয়ে ফেললো ছিঁড়ে ছিঁড়ে।

কিন্তু শুধু ফুল খাইয়ে আমাদের মন ভরলো না। তখন সে আমাদের আরও কাছাকাছি। এতই কাছে যে তখন ছবি তোলারও উপায় নেই। অনেকটা ভুলে গেলাম একথা। কারণ ততক্ষণে একটি পাত্রে রাখা বিদেশি চকলেট মোড়ক ছিঁড়ে অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে খেতে শুরু করেছে। বুঝলাম, টিয়েবাবু নাম রাখাটা আমাদের শতভাগ স্বার্থক।

এবার ঘটলো আরও অদ্ভুত কাণ্ড! টিয়েবাবু উড়ে এসে বসলো আমার ঘাড়ে। অনেকটা অবাক হলাম! ছবি তোলা বাদ দিয়ে অন্যরা মোবাইলে ভিডিও করা শুরু করলো তখন। একটু নড়তেই আবার উড়ে গিয়ে বসলো বাগানের একটি গাছে।

কারও পোষা টিয়া কিনা আমরা জানি না। আমাদের একজন তাকে ধরতে চেষ্টা করার সঙ্গে সঙ্গে উড়ে গিয়ে বসলো অন্য এক বাড়ির ছাদে। যেন জানিয়ে গেলো, আমি তোমাদের, কিন্তু আমি মুক্ত প্রকৃতির। তারপর আমরা অপেক্ষা করলাম বেশ কিছুক্ষণ। শুধু টিয়েবাবুর জন্য! কিন্তু আর নামলো না সে। শান্ত বিকেলের সেই সুন্দর মুহূর্তটি এখনো গেঁথে আছে মনে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৩
এএ/