ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

গৃহশান্তিতে বাড়ির কোন পাশে লাগাবেন কোন গাছ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:১৮, জানুয়ারি ১৭, ২০১৪
গৃহশান্তিতে বাড়ির কোন পাশে লাগাবেন কোন গাছ

মনের মতো বাড়িতে চাই একটি মন ভোলানো বাগানও। আপনার অনেক দিনের শখ নিজের বাড়িতে নিজের হাতে বাগান করবেন।

কিন্তু জানেন কি? বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে বসতবাড়িতে গৃহশান্তি, শ্রীবৃদ্ধি বজায় রাখার ক্ষেত্রে গাছপালা বিরাট ভূমিকা পালন করে!

আবাক হচ্ছেন! কিন্তু জেনে রাখুন ‘বায়ু’ জীবনের মূল উপাদান। আর বাস্তুশাস্ত্র বলছে, বায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে জীবনের মান অনেকটাই উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া যায়।

বসতবাড়িতে বৃক্ষরোপণ বা বাগান করার বিষয়ে বাস্তুশাস্ত্রের বিধান ঠিক কি রকম হওয়া উচিত তারই হদিস দিচ্ছেন বাস্তুজ্যোতিষ বিশেষজ্ঞ কুমারী রুবাই

পরিশুদ্ধ বায়ু আমাদের প্রাণ। এই বায়ু পাওয়া যায় গাছপালা থেকে। পরিবেশ দূষণের প্রকোপ থেকে জীবজগতকে রক্ষা করার জন্যও নানাবিধ কারণে সর্বস্তরে বৃক্ষরোপণের উপযোগিতার কথা আরও ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়া প্রয়োজন বলে আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়।

আবার বাস্তুশাস্ত্র অনুসারেও বসতবাড়িতে গাছ লাগানো, ফুল-ফলের বাগান করা অত্যন্ত শুভ। তাই আমরা আলোচনা করব বসতবাড়িতে বৃক্ষরোপণ বা বাগান করার বিষয়ে বাস্তুশাস্ত্রের বিধান ঠিক কেমন হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে কিছু টিপস নিয়ে।

তুলসি খুবই উপকারী গাছ। প্রাচীন আয়ুর্বেদ থকে আধুনিক চিকিৎসার বিভিন্ন বিভাগে তুলসীর গুণের কথা উঠে আসে।

ইটালি এবং ইটালি সংলগ্ন কয়েকটি ছোট দ্বীপে সেখানকার প্রাচীন রন্ধনপ্রণালীতে জীবাণুনাশক উপাদান হিসেবে তুলসি পাতা খাদ্যে ব্যবহার করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে ওষুধি হিসেবে তুলসির জনপ্রিয়তা আছে।

বাস্তুশাস্ত্র মতে বাড়ির উঠোনে তুলসী গাছ থাকা অত্যন্ত কার্যকরী। তুলসির গন্ধবাহী বাতাস চারদিকের পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

তুলসি গাছের গন্ধযুক্ত বাতাস সবার পক্ষেই অত্যন্ত উপকারী। তাই সব বসতবাড়িতেই তুলসি গাছ রাখা উচিত বলে আমার অভিমত।

বসতভিটায় সব বড় বড় গাছ শুভকর নাও হতে পারে। এ সম্পর্কে বাস্তুশাস্ত্রে কিছু বিধি-নিষেধও পাওয়া যায়।

বসতভিটার অভ্যন্তরে বা বাগানে শ্রীবৃদ্ধিকারক গাছগুলি হলো-বেল, সুপারি, নারকেল, জাম, কাঁঠাল, আম, ডালিম, কমলালেবু, লেবু, আমলকি, দেবদারু, বকুল, চাঁপা, সজনে প্রভৃতি।

বাড়ির পূর্বদিকে অশ্বত্থ গাছ থাকা, পশ্চিমে বটগাছ, উত্তরে ডুমুর গাছ থাকা বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী অশুভ।

এছাড়া আরও কিছু নিয়ম-নীতি আছে যেগুলি ব্যবহার করলে শুধু আপনি একটি সুন্দর বাগানই পাবেন না, সঙ্গে পাবেন বাড়ির ও পরিবারের সুন্দর জীবন।

রামায়ণ-মহাভারতের বৃক্ষের শক্তির কথাও আমারা জানতে পারি। মৃত সঞ্জীবনী বাটিকার মাধ্যমেই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন লক্ষ্মন। আজও পৃথিবীর সব দেশেই গাছের বিভিন্ন ভাগকে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়।

অনেক ক্ষেত্রেই বৃষ্টি, ঝড়, নদীর গতিপথ নির্ভর করে গাছ বা বনভূমির অবস্থানের উপর। নদীর ভাঙন রোধ করা যায় গাছ লাগিয়েই।

আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে গাছকে দেবঞ্জনে পূজা করা হয়। তাই এ কথা স্বীকার না করে উপায় নেই গাছ মানুষের জীবনের প্রতি ক্ষণে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এ কথা আধুনিক বিজ্ঞান বার বার স্বীকার করে। আসুন জেনে ফেলি বাস্তুমতে কয়েকটি গাছের প্রভাব।

বাড়ির বাইরে যে সব গাছ অশুভ ফল দেয় তা হলো-
পূর্ব দিকে অশুভ গাছ-আম, অশ্বত্থ, জাম, কলা।
পশ্চিম দিকে অশুভ গাছ-আম, কলা, বট।
উত্তর দিকে অশুভ গাছ-ডুমুর, কলা।
দক্ষিণ দিকে অশুভ গাছ-আম।
দক্ষিণ-পূর্বদিকে অশুভ গাছ-বট, শিমুল, অশ্বত্থ, পাকুড়।
দক্ষিণ-পশ্চিমদিকে অশুভ গাছ-কদম।
উত্তর-পূর্বদিকে অশুভ গাছ-কলা।
উত্তর-পশ্চিমদিকে অশুভ গাছ-যে কোনো কাঁটাযুক্ত গাছ।
বাস্তুমতে বাসস্থান সংলগ্ন জমির উত্তর-পশ্চিম দিকে বাগান করা উচিত।
বাগানের উত্তর-পূর্বদিকে বনৌষধি গাছ-গাছড়া লাগানো শুভ।
বড়-বড় পাতা যুক্ত গাছপালা লাগানো প্রয়োজন।
দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে।

উপর্যুক্ত দু’টি দিকের মাঝখানে ফুল-ফলের গাছ লাগান।
গৃহসীমার মধ্যে ফল ও ফুলের গাছ লাগালে তা বসতবাড়ির সবার পক্ষে কল্যাণকর হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৪
সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।