ঢাকা, শনিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৭ মে ২০২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

বাঘ রক্ষায় গ্রামবাসীদের উদোগ

জেসমিন নাহার লাকি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪৯, জানুয়ারি ২৫, ২০১১
বাঘ রক্ষায় গ্রামবাসীদের উদোগ

বিশ্বব্যাপী বাঘ সংরক্ষণ, সুন্দরবন সংরক্ষণ আন্দোলনগুলো এখন আলোচনার শীর্ষে। আমাদের দেশেও হাতে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।

এরই একটা ছোট কিন্তু সুন্দর উদাহরণ, সুন্দরবনসংলগ্ন উত্তর রাজাপুর গ্রাম। সম্প্রতি গ্রামবাসীর প্রচেষ্টায় সুন্দরবনের বাঘরক্ষা কার্যক্রম ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে বন বিভাগের কাছে।

গত ডিসেম্বর মাসের ঘটনা। সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ এলাকার উত্তর রাজাপুর গ্রামে হঠাৎ একটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার বের হয়ে আসে। একটা গরু মেরে ফেলে আবার বনে ফিরে যায়। এই গ্রামে বাঘ ঢোকার এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। সবাই খুব ভীত হয়ে পড়েছিলেন। গ্রামবাসী ভাবলেন, বাঘটি আবার না গ্রামে ঢুকে আক্রমণ করে বসে। গ্রামে বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দল ছিল, যারা VTRT (Village based Tiger Response Team) নামে পরিচিত। এই দলটি সুন্দরবনের বন বিভাগের উদোগে স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্য থেকে তৈরি করা হয়। তারাই স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে। পরে স্থানীয় মসজিদে গিয়ে ইমামের সাথে কথা বলে সাহায্য চায়। এরপর মসজিদ থেকে মাইকে গ্রামে বাঘ প্রবেশের ঘটনাটি বলে সবাইকে সচেতন করা হয়। এই দলের উদ্দেশ্য ছিল, সবাইকে সচেতন এবং নিরাপদ রাখা। তবে সৌভাগ্যক্রমে বাঘটি আর গ্রামে প্রবেশ করেনি।  

VTRT-এর টিম লিডার মোঃ দুলাল চাপরাশি বলেন, ‘এটা খুব ছোট একটা কাজ হলেও একটা বড় পাওয়া’। গ্রামবাসীরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন একটি উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যদি বাঘ বাঁচাই, তাহলে সুন্দরবন বাঁচবে। আর সুন্দরবন বাঁচলে আমাদের জীবিকাও বাঁচবে। কাজেই বাঘ রক্ষা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। আর এই সচেতনতা মানুষ ও বাঘ উভয়কেই রক্ষা করতে পারে।

Wildlife Trust of Bangladesh-এর সদস্য আশরাফুল হক এই দল গঠনে সাহায্য করেছেন। তার মতে, ‘বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমের এখনও অনেক বাকি। তবে, মাঠ পর্যায়ের এসব প্রস্তুতি এবং কর্মসূচি অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। এরকম লোকজন থাকলে, নিকট ভবিষ্যতে বাঘ অবশ্যই সংরক্ষিত হবে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বন বিভাগের সহযোগিতায় যেসব দল গঠন করা হয়েছে, তারা সুন্দরবনসংলগ্ন ২৯টি গ্রামে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সবাই তাদের সময় এবং দক্ষতা দিয়ে গ্রামবাসীকে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে বাঘ হত্যা না করেও নিরাপদে থাকা যায়। ’  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।