ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৭ মে ২০২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ব্রহ্মপুত্রের উপকণ্ঠে চিড়িয়াখানা

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:২৪, মে ১৪, ২০১৪
ব্রহ্মপুত্রের উপকণ্ঠে চিড়িয়াখানা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ব্রহ্মপুত্র নদের উপকণ্ঠে আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে শত বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জয়নুল উদ্যান পার্ক। শহরবাসীর চিত্তবিনোদনের একমাত্র এ কেন্দ্রে বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছে চিড়িয়াখানা।



বছরজুড়ে পাঠ্য বইয়ে মুখ গুঁজে থাকা শিশুরা এখন এ পার্কের চিড়িয়াখানায় ছুটে ফিরছে উচ্ছ্বাসে। বাদ যাচ্ছেন না তাদের বাবা-মাও।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইকরামুল হক টিটু পৌরবাসীর প্রত্যাশা ও জনস্বার্থ বিবেচনায় জয়নুল উদ্যান পার্কটিতে দৃষ্টিনন্দন ও সুযোগ সুবিধা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেন।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা. বৈশাখী মঞ্চ এ পার্কটির বৈশিষ্ট।

ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ সংলগ্ন পার্কটিতে প্রতিদিন সকাল-বিকেল হাজার হাজার মানুষ অবকাশে যাপন, চিত্তবিনোদন ও সময় কাটানোর জন্য আসেন।

নতুন আদলে সাজানো জয়নুল উদ্যান পার্কটির অভিনবত্ব শুধু নতুন নামকরণেই সীমাবদ্ধ নয়। এখানে নতুনত্ব হচ্ছে চিড়িয়াখানা আর বিশেষত্ব হচ্ছে সৌন্দর্যবর্ধন। ফলে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটে চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন পশু-পাখির সঙ্গে নিজের সন্তানদের পরিচিত করে তুলতে সবাই ছুটছেন জয়নুল উদ্যানে।
zoo_mymensingh
সম্প্রতি পহেলা বৈশাখের আগের দিন পৌর মেয়র ইকরামুল হক টিটু এ পার্কটির উদ্বোধন করেন।

বৈশাখী মঞ্চের পাশেই স্থাপিত চিড়িয়াখানাটি। এখানে রয়েছে অজগর, ময়ূর, বানর ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এ চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথির তালিকায় রয়েছে হরিণ ও হাতি।

উদ্বোধনের প্রথম দিনেই প্রায় ৩০ হাজার টাকার টিকেট বিক্রির রেকর্ড গড়ে এ চিড়িয়াখানাটি। সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন চিড়িয়াখানার সামনে শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড়।

জয়নুল উদ্যান পার্কের ভেতর চিড়িয়াখানা থিমটি সবার কাছে সমাদৃত হয়েছে। সব বয়সী মানুষ এখানে দর্শক। দর্শনার্থী মূল্য শিশুদের জন্য ১০ টাকা। বড়দের জন্য ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।  

পরিবেশ বান্ধব সবুজ পার্কটি চিরচেনা রূপ ছেড়ে এখন আধুনিক। দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা, বসার ব্যবস্থা কিংবা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সব মিলিয়েই পার্কটি এখন আকর্ষণীয়।

এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বাংলানিউজকে বলেন, চিড়িয়াখানাটি আরো সমৃদ্ধ করতে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কয়েকদিনের দিনের মধ্যেই এখানে আনা হবে আরো নতুন নতুন অতিথি।  
zoo_mymensingh_2
চিড়িয়াখানা দেখতে আসা শিশু জনি (১০) জানায়, চিড়িয়াখানায় অজগর দেখতে এসেছি। আমার খুব ভালো লেগেছে। নানান বর্ণ ও প্রকৃতির পশু-পাখি দেখতে চিড়িয়াখানায় এসে এসব শিশুর বিস্ময়ের মাত্রাও বাড়ছে।

এসব শিশু-কিশোরের অভিভাবকরা জানান, আগে ময়মনসিংহে কোনো চিড়িয়াখানা ছিল না। শিশু বয়সে চিড়িয়াখানা দেখতে আমাদের বাবার হাত ধরে ঢাকায় যেতো হতো। এখন নিজের শহরেই সন্তানকে চিড়িয়াখানা দেখাতে আসছি। সত্যিই মেয়রের এ উদ্যোগ অসাধারণ।

সবুজ শহর ময়মনসিংহ প্রকৃতির কাছে, নদীর কাছে মানুষের অবকাশ যাপনের যে তাগিদ তা জোরদার হয়েছে জয়নুল উদ্যানে। সংস্কৃতি নগরীতে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের স্মৃতিকে মনে রাখতে একটি শিল্পীত পার্ক উপহার দিয়েছে পৌরসভা। পার্কের বিউটিফিকেশন কিংবা চিড়িয়াখানা দেখতে শহরবাসীর সব পথ যেন গিয়ে মিশেছে সার্কিট হাউজ সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র তীরে জয়নুল উদ্যানে।

বাংলাদেশ সময়: ০২২৪ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।