আপনার সদর দরজার উপরে কি রাখা আছে কোনো দেওয়াল ঘড়ি? অথবা আপনার সদর দরজার মাথায় কি ঝোলানো আছে দিনপঞ্জি বা ক্যালেন্ডার? যদি থাকে তবে জেনে রাখুন, বাস্তুশাস্ত্র মতে সদর দরজার উপরে বা দু’পাশে ক্যালেন্ডার ঝোলানো একেবারেই অনুচিত।
শুধু তাই নয়, আপনার উন্নতি ও পারিবারিক শান্তির জন্য সদর দরজার উপর ঘড়ি রাখা মোটেই শুভ নয়।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলানিউজে প্রকাশিত হয়ে আসছে বাস্তু সংক্রান্ত নানা তথ্য। কিছু ছোট ছোট তথ্য আপনার জীবনধারণকে অনেকটাই সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করে তুলতে পারে। আপনার জীবনে শান্তি বজায় থাকলেই আসবে সমৃদ্ধি ও উন্নতি।

আজকের দ্রুত গতির জীবনে দিনপঞ্জি বা ক্যালেন্ডারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এছাড়াও বাড়িতে নানা প্রয়োজনে ক্যালেন্ডার বা দিনপঞ্জি দেখার দরকার হয়। সে কারণে ঘরে সুবিধামতো জায়গায় ক্যালেন্ডার টাঙিয়ে রাখা হয়।
আপনার ব্যক্তিগত রুচি ও সুবিধা অনুযায়ী ঘরের সব দিকেই ক্যালেন্ডার লাগাতে পারেন। তবে লক্ষ্য রাখবেন ক্যালেন্ডারের ছবি যেন যুদ্ধের বা কোনো হিংস্র জন্তু শিকারের না হয়। শান্ত, সুন্দর, পবিত্র ছবি ইতিবাচক শক্তি বয়ে আনে।
বাড়ির দরজা, বিশেষ করে যাতায়াতের প্রধান দরজার ওপর বা তার দু’পাশে ভুল করেও ক্যালেন্ডার লাগাবেন না। বাস্তুশাস্ত্র মতে, চোখের ওপর এভাবে দিনের হিসাব ঝুলিয়ে রাখলে ব্যক্তির পরমায়ুর পক্ষে অশুভ। আপনি যখন বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন ক্যালেন্ডার আপনার চোখের সামনে কোনোভাবেই থাকা উচিত নয়।
কিন্তু এর কারণ কি? বাস্তুশাস্ত্র বলছে, প্রতি মুহূর্তে মাস, বছরের উল্লেখ আপনাকে মনে করিয়ে দেবে জীবনের দিনগুলি ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে। আর এর ফলেই আপনার মনে নেতিবাচক একটি শক্তির জন্ম হবে। এই নেতিবাচক শক্তি আপনাকে রোজকার জীবনে এগিয়ে যেতে বাধা সৃষ্টি করবে।

এই চিন্তা আপনার মনকে দুর্বল করে দিতে পারে। আপনি হয়ে উঠতে পারেন হতাশাগ্রস্ত। এ কারণেই বাড়ির সদর দরজার উপরে বা দু’পাশে ক্যালেন্ডার ঝোলানো উচিত নয়।
অনেকে ধর্মীয় কোনো ছবি বা মন্ত্র অথবা ধর্মীয় কোনো বক্তব্য ছাপা থাকার জন্য ঠিক বেরোবার মুখে ক্যালেন্ডারটি ঝুলিয়ে রাখেন। তাদের জন্য উপদেশ, তারিখের অংশটুকু বাদ দিয়ে ছবির অংশটুকু অবশ্যই ঝুলিয়ে রাখতে পারেন।
এবার আসি ঘড়ি প্রসঙ্গে। বাস্তুশাস্ত্রের মূল কথা প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নত এবং শান্তিপূর্ণ মানবজীবন অতিবাহিত করা। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আপনার বাড়িতে যেকোনো বস্তুকে ব্যবহার করা উচিত।
যেকোনো তীব্র বা উৎকট শব্দ, যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য, কটূগন্ধ প্রভৃতি ইতিবাচক শক্তিকে প্রভাবিত করে। ঘড়ির অ্যালার্ম এর ব্যতিক্রম নয়। যদি আপনি ঘণ্টায় ঘণ্টায় শব্দ করে এমন ঘড়ি বাড়িতে রাখতে চান, তবে খেয়াল রাখবেন তার আওয়াজ যেন শ্রুতিমধুর হয়। কখনই সেই শব্দ এতটা তীব্র না হয় যা নেতিবাচক কোনো প্রভাবের সৃষ্টি করে। ঘড়িতে যদি কোনো গানের সুর বাজে লক্ষ্য রাখতে হবে সেই গানের সুর যেন বিষাদের না হয়। আবার এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে যে সেই গানের সুর যেন খুব উত্তেজনাকর না হয়।

নরম সুরের বাজনা আপনার ঘরে প্রবাহমান শুভ শক্তির সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে ধ্বনিত হবে এবং ঘরে শুভ শক্তি অব্যাহত রাখবে। ঘড়ির খুব জোর বাজনা বা যেকোনো হট্টগোলের শব্দ ঘরে প্রবাহমান ইতিবাচক শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করে। একইসঙ্গে ঘরের শক্তির ভারসাম্য বিঘ্নিত করে এবং অশুভ শক্তিকে আকর্ষণ করে, যা বাড়ির পক্ষে অমঙ্গলজনক।
প্রতিবেদনের শুরুতে যে কথা বলা হয়েছে শেষেও সেই একই কথা আবার মনে করিয়ে দিতে চাই, সদর দরজার উপরে দেয়াল ঘড়ি লাগানো একই কারণে পরমায়ুর পক্ষে শুভ নয়।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৪