‘কলসি ভোরাইয়া রাধে তইল কদম তলে/কদম ফুল ঝরিয়া পড়ে কলসির মাজারে/আগে যদি জানতাম পুষ্প পড়বারে ঝরিয়া/ শাড়িরঅ আঞ্চল দিইয়া রাখিতাম ঢাকিয়া/কদম ফুল গাঁথিয়া রাধে ধ্যানে মগ্ন হয়/ রাধা-কৃঞ্চের যোগল চরণ জলে ফুটে রয়’
শ্রীকৃষ্ণের প্রেমে বিরহকালীন সময়ে কদমতলে বাঁশি বাজানোর ঘটনা স্মরণ করে নবদম্পতির মঙ্গল কামনায় কনের স্নান করানোর জন্য পানি সংগ্রহের সময় এ গীতটি সমেবতভাবে পরিবেশন করে নারীরা। এই কদম ফুল এখন আর আগের মত চোখে পড়েনা।

গ্রাম-শহরের রাস্তার পাশে ও বন-বাদড়ে এক সময় ব্যাপকহারে অনাদর অবহেলায় বেড়ে ওঠা কদম বর্ষায় প্রকৃতিকে করত মোহনীয়। কল্পনীয় সৌন্দর্যের অধিকারী কদম ফুল লোকগীতি, নজরুল-রবীন্দ্র সাহিত্যশৈলী ও বাংলা সাহিত্যাঙ্গনসহ রাধাকৃঞ্চের প্রেম-বিরহের কাহিনীতেও জায়গা করে নিয়েছে।
আকার, গন্ধ আর পেখম মেলা সৌন্দর্যের প্রতীক কদম সাধারণত আষাঢ় মাসের প্রথমে বৃষ্টিস্নাত দিনে ফোটে। তবে ফুটতে দেখা যায় জ্যৈষ্ঠের শেষেও।

মনোমুগ্ধকর কদমের জন্ম এশিয়ার চীন,ভারত, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপে। কদম, কদম্ব, কদম্বক, নীপ। বৈজ্ঞানিক নাম ‘Anthoce phalus chinensis.
বিশাল আকৃতির কদমের গাছ হয় উঁচু, লম্বা। সোজা ডাল, অগণিত ফাটল ও রুক্ষ বৃক্ষদেহ। গাঢ় সবুজ বিশাল পত্ররাজি। শীতকালে পাতা ঝরে ন্যাড়া হলেও বসন্তের ছোয়ায় কুঁড়ি বহর নিয়ে আর্ভিভাব হয় প্রকৃতিতে।
গোলাকৃতির পুষ্পদেহে অগণিত আলপিনের মতো শুভ্র পাপড়ি। হলুদ বলের মধ্যে নিপুণভাবে সাজানো। যেন বর্ষার ছোঁয়ায় পেখম মেলে বসেছে কোনো সুন্দরী ঊর্বশী।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৪