ঢাকা: প্রতীক্ষা যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছিলো না। কখন আলোকিত হবে আমার আঁধার কালো রাতটা! আসছে রাতের রানী।

প্রশস্ত সবুজ পাতায় ক্ষণিকের অতিথি। পক্ষকালের বাড়ন্ত শরীর নুয়ে পড়ে মৃত্তিকা কোলে। তারপর আবার মাথা তুলে যেন দেখতে চায়, দেখাতে চায় পৃথিবীকে কোনো একরাতে- আমি এসেছি, তোমাদের মুগ্ধ করতে আমার শুভ্রতায়। তবে বেশিক্ষণ নয়, সুন্দর যে ক্ষণস্থায়ী!
বলছি নিশপদ্ম বা নাইটকুইন ফুলের কথা। যে এই ফুলটি ৬ ঘণ্টা বসে থেকে ফোটা দেখেনি সে সত্যিই পৃথিবীর সুন্দরতম একটি মুহূর্ত মিস করেছে।

ফুলের বিশদ বিবরণ আমার উদ্দেশ্য নয়। যারা ফুল ভালোবাসেন, যারা বোঝেন তাদের জীবনসৌন্দর্য, কষ্ট, যত্ন নেন নিজের শরীরে মতো, তারপর ভালোবসার পরিণতি দেখে ভাসে আবেগের ঢেউয়ে- লেখাটি তাদের জন্য।

ক’দিন ধরে বাসায় থাকা অবস্থায় একটাই কাজ ছিল। সবুজ ডাঁটা সদৃশ ফুলের কুঁড়িটিকে বাড়তে দেখা। সঙ্গে পরিণতির প্রতীক্ষা। অবশেষে এলো প্রতীক্ষা অবসানের দিন।
সন্ধ্যা হতেই শুরু করলো পাপড়ি মেলা। খুব ধীর গতিতে। শুভ্র শরীর ফুঁড়ে প্রথম চোখ মেলে দেখা। বসে থাকলে প্রতিটি মুহূর্ত পারবেন উপভোগ করতে। এই অনুভূতি বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আস্তে আস্তে একটু একটু করে পাপড়ি

মেলতে মেলতে রানী দেখাতে থাকে তার রূপ-যৌবন। মিষ্টি সুগন্ধি মাখা শুভ্র আভা।
নাইটকুইন নামটি কে দিয়েছিল জানি না। তবে তিনি মোটেও ভুল করেন নি এটা বলা যায় হলফ করে।

আঁধার পূর্ণ আলোকিত হয় মূলত রাত্রি ১১-১২টার দিকে। সাদা সাজানো পাপড়ির ভিতরে কেশর। যত সময় গড়ায় ফুলের গোড়ার কেশরগুলো গোটাতে থাকে পিছে। তখন মনে হয় সেগুলো যেন রানীর অলঙ্কার, সৌন্দর্যকে যেন বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।

রাত ফুরানোর আগেই ছুটি হয় রানীর। হারিয়ে যায় কোন অতলে। আবার হয়তো মিলবে দেখা কোনো এক বরষায়। আবার প্রতীক্ষা…
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৪