ঢাকা: আরব্য রজনীর দৈত্য-দানো বা আলাদিনের জ্বীনের কথা মনে আছে? মাথায় খাড়া শিং, পুরো শরীর আর চোখ-মুখ বিদঘুটে রং দিয়ে আঁকা। এতদিন তারা ছিলেন বইয়ের পাতায়, বড়জোর টিভির পর্দায়।
এবার তারা দেখা দিচ্ছে আপনার চিরচেনা বাস্তবের জগতে। খটকা লাগছে তো? ভাবছেন, শিং মাথার গল্পের দৈত্য-দানো কীভাবে বাস্তবে দেখা মিলবে! বলছি শুনুন।
তবে যুগটা আধুনিক তো, ফট করে তাদের দৈত্য-দানো বললে তাদের মন খারাপ হতে পারে। তাদের বরং আপনি ‘ট্যাটু ম্যান’ বলে ডাকতে পারেন। বাকি ব্যাপারগুলো সব ঠিক আছে।

এরকম এক ট্যাটু ম্যানের সাথে পরিচিত হয়ে নিন। নাম তার ম্যাথিউ হুইলান। ম্যাথিউ আবার ট্যাটু ম্যানদের মধ্যে সেরা। ব্রিটেনে সব থেকে বেশি ট্যাটু অর্থাৎ আঁকিবুকি তার শরীরে। মাথার পেছনে করেছেন জেরেমি কাইল নামের এক ট্যাটু।
তার কীর্তি এখানেই শেষ নয়। তিন ঘণ্টা অস্ত্রপচার করে থ্রিডি সিলিকন খুলি লাগিয়েছেন বুকে। ২০০৮ সালে নাম পরিবর্তনের আগে কসমেটিক সার্জারির পেছনে প্রায় ৪৬ হাজার টাকা খরচ করেছেন।
মি. বডি আর্ট থেকে তার ডাক নাম এখন হয়ে গেছে ‘বার্ট’। বুকে সিলিকন খুলি বসিয়েছেন বছর খানেক হলো। এর আগে নিজের বুক নিয়ে তার ভাষ্য, তখন এটা শুধুমাত্র একটি মাংসপিণ্ডের মত দেখাত।

৩৪ বছর বয়সী বার্মিংহামের এ বাসিন্দা প্রথম ট্যাটু করেন ১৬ বছর বয়সে। ডান বাহুতে একটি সাধারণ বুলডগের ছবি। বাচ্চাদের স্কুলে থাকতেই তার ভেতর বডি আর্টের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়।
এ নিয়ে বললেন, নয় বছর বয়সে মাওরি সংস্কৃতির প্রেমে পড়ি আমি। লোকে এটাকে পাগলামি বলত কিন্তু এর একটা আলাদা জীবনবোধ ছিল।
তার বুকে লাগানো থ্রিডি সিলিকন খুলি প্রসঙ্গে বলি। খুলির মোটিফ বহন করা সিলিকনপূর্ণ বলটি বুকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এসময় বুকের মাংস আটোসাঁটো দলার মতো রূপ নেবে। চামড়ায় তখন ফুটে উঠবে একটি পৈশাচিক মাথার ছাপ। এজন্য এ ট্যাটু ম্যানের খরচ হয়েছিল পাক্কা ৪০ লাখ টাকা!

অস্ত্রোপচারের সময় প্রচণ্ড ব্যথায় তার সাহায্যের দরকার পড়েছিল কিন্তু এ নিয়ে তার বক্তব্য, আদিবাসীরা এর চেয়েও বেশি ব্যথা সহ্য করে। আপনার ব্যথা নিরোধক মলম লাগানোর সুযোগ আছে কিন্তু আমি এটা ছাড়াই শুরু করেছিলাম।
তবে শরীরের এই আঁকিবুকি নিয়ে কোনো দুঃখবোধ নেই মি. বডি আর্টের। সম্প্রতি কিছু ট্যাটু শরীর থেকে মুছে ফেলতে লেজার সার্জারির সাহায্য নিয়েছেন।
এটাকে তিনি বলছেন, নতুন ট্যাটুর জন্য কিছু মাংস খালির মতো। তার ভাষায়, এটা অনেকটা বাড়িতে ছবি টাঙিয়ে রাখার মতো। একই জিনিস দেখতে দেখতে আপনি বিরক্ত হয়ে উঠবেন ও নতুন একটি দেখতে চাইবেন।
বার্মিংহাম ইঙ্ক বডি মডিফিকেশন স্টুডিও থেকে করিয়েছেন তার নতুন ট্যাটু।
তিন বছর আগে এ ট্যাটুম্যান তার প্রিয় টিভি প্রোগ্রামে এসেছিলেন বৈষম্য নিয়ে কথা বলতে।
এই প্রোগ্রামে আসার অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, আমি নতুন কিছু করতে চেয়েছিলাম। তাই আমি শো-এর আগে নতুন ট্যাটু করেছিলাম। দর্শকদের সেটা পছন্দ হয়েছিল এবং তারা সেটার প্রশংসা করেছিলেন।
লিবারেল ডেমক্র্যাট এ কর্মীর শরীরের প্রায় ৯০ ভাগ ট্যাটুতে আঁকা। এর আগেও ডেইলি মেইলের খবর হয়েছিলেন। তবে সেটা তার অস্বভাবিক নামের কারণে তাকে পাসপোর্ট না দেওয়ার কারণে। তখন ব্যাপারটাকে তিনি দেখেছিলেন, মানবতা লঙ্ঘন হিসেবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৪