ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৬ মে ২০২৫, ১৮ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

বেদেনীর কাণ্ড...

বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৪৭, আগস্ট ১০, ২০১৪
বেদেনীর কাণ্ড... ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: সকাল এগারোটা। হঠাৎ এক বেদেনীকে দৌঁড়াতে দেখলাম।



তার পিছে ধাওয়া করেছে বেশ কয়েক যুবক। এক পর্যায়ে বেদেনী দৌঁড়ে গিয়ে রাস্তার পাশে কাসুন্দি নামে এক হোটেলে ঢুকে পড়ল।

তার পিছু নেওয়া যুবকগুলোও ঢুকে পড়ল ওই হোটেলে। শনিবার সকালে বসুন্ধরা গেট এলাকায় এ কাণ্ড ঘটে।

এক পর্যায়ে তাদের পেছনে ছুটলাম আমি নিজেও। জানার আগ্রহ হল আসলে ব্যাপার কী। কেন তারা এক অসহায় নারীকে তাড়া করেছে।

হোটেলের সামনে গিয়ে জানতে চাইলাম ভাই বিষয় কি?

এক যুবক উত্তরে বললেন, আমি বসুন্ধরা গেটের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। দুই বেদেনী এসে আমার কাছে ১০ টাকা চায়।

তখন আমি পকেটে হাত দেই,  পকেটে থাকা এক হাজার টাকার একটি নোটের মাঝে কিছু খুচরা টাকা বের হয়ে আসে।   তার মধ্যে থেকে ১০ টাকা দিতে গেলেই বেদেনী আমার হাতে থাকা এক হাজার টাকার নোট নিয়ে দৌঁড়ে পালাতে থাকে। আমার চিৎকার শুনে কয়েকজন সহৃদয় যুবক এগিয়ে আসে। তারাই বেদেনীকে তাড়া করে হোটেলে আটকে ফেলে।

তিনি বলেন, হোটেলের ম্যানেজার তার ওপর চাপ প্রয়োগ করলে এক পর্যায়ে বেদেনী টাকা ফেরত দেয়। পরে হোটেল ম্যানেজার তাদের বের করে দেন।

হোটেল থেকে বেদেনীদের বের হয়ে যাওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করলাম, তোমাদের এমনিই ছেড়ে দিয়েছে?

উত্তরে বেদেনী বলে, টাকা তো ফেরত দিয়েছি তাহলে আমাদের ছাড়বে না কেন।

বেদেনী বলে, ভাই আমাদের কাজ কর্ম না থাকায় আমরা খুব কষ্টে দিন কাটাই।

ঘরে ‍আমার তিন বছরের একটা ছেলে আছে। অসুখ ছাড়ে না। ডাক্তার দেখাতাম। টাকা লাগবে। তাই এক হাজার টাকা দেখে মাথা সামলাতে পারি নাই। আমাদের এক বেলা ভাতের পয়সা জোগাড় করতে খুব কষ্ট করতে হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের কাছে যাই দু’এক টাকার জন্য। কেউ মনে চাইলে দেন, না মনে চাইলে নেই।

তিনি বলেন, আমাদের যে কাজ কর্ম ছিল এখন এগুলো নেই। মানুষ এখন আর এগুলো (সিঙ্গা লাগানো, দাঁত থেকে পোকা বের করা ইত্যাদি) বিশ্বাস করে না। আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের হাতে কোনো কাজ নেই। কি করে চলবে আমার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেদেনীরা রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মানুষের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা আদায় করে নেন। অনেক সময় মানুষ তাদের আচরণে লজ্জায় পড়েও টাকা দিতে বাধ্য হন।

বেদেনীদের কাছ থেকে সতর্ক থাকতেও বলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।