ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

নোম্যান্সল্যান্ডের বুকে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৭
নোম্যান্সল্যান্ডের বুকে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি নোম্যান্সল্যান্ডের বুকে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি

বেনাপোল (যশোর): বাংলার শেষ প্রান্তে মাথা উ‍ঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা। হাতে পতাকা উড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রবীন্দ্র, নজরুল তাদের বাণী শুনিয়ে দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণকারী পথচারীদের আকৃষ্ট করছেন।

 

প্রাচীরে খোদাই করে আঁকা হয়েছে বাংলার গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, সুন্দরবন ও সংস্কৃতির ইতিহাস নিয়ে কারুকার্য। চলছে সাংস্কৃতিক আড্ডা।

যেন সত্যি সত্যি নোম্যান্সল্যান্ডের বুকে আরও একখণ্ড বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি!

রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল তাদের বাণী শুনিয়ে ভ্রমণকারীদের আকৃষ্ট করছেন

বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত, আমদানি-রফতানি পণ্যের মূল প্রবেশ দ্বার বাংলাদেশ গেট ও তার আশপাশে নিরাপত্তা প্রাচীরে নিখুঁত এসব কারুকার্যের স্থাপনা দেখা যায়। এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে কেউ দেখলে না দাঁড়িয়ে উপায় নেই।

এসব স্থাপনার ঠিক ওপর সীমান্তে রয়েছে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও আন্তর্জাতিক কাস্টমস-ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট। সহজে বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশ প্রবেশ মুহূর্ত ও বিদায়ের সময় গৌরবময় এসব ইতিহাস সম্পর্কে জানার সুযোগ পাচ্ছে। বছর দুই আগে বেনাপোল পৌরসভার উদ্যোগে এসব নির্মাণ করা হয়।

হাতে পতাকা উড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে এখনও আমাদের অনেকের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষায় প্রতিদিন হাজার হাজার দেশ-বিদেশি মানুষ দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করছে। দেশের গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টিতে যারা অবদান রেখেছেন সেই সব মহাপুরুষদের প্রতি সম্মান জানাতে ও বিশ্ববাসীর কাছে বাংলার পরিচিতি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে এসব ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।

 প্রাচীরে খোদাই করে আঁকা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, সুন্দরবন ও সংস্কৃতির ইতিহাস নিয়ে কারুকার্যএদিকে, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এখানে নোম্যান্সল্যান্ডে (জিরো রেখায়) প্রতিদিন আধা ঘণ্টা সময় ধরে রিট্রেট সিরিমনি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ সদস্যরা এক সঙ্গে দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পতাকা নামানো ও প্যারেড করে থাকে। বিশেষ বিশেষ দিনে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় দেশাত্মবোধক গান ও গৌরবময় ইতিহাসের কাহিনী নিয়ে। এপথে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াতকারী দেশি-বিদেশি শত শত মানুষ এ অনুষ্ঠান উপভোগ করে থাকে।
বিশেষ বিশেষ দিনে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় দেশাত্মবোধক গান ও গৌরবময় ইতিহাসের কাহিনী নিয়ে
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, দেশ স্বাধীনের পরপরই এ পথে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত ও আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের সূচনা হয়। বর্তমানে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় হাজার পর্যন্ত পাসপোর্ট যাত্রী এপথে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করছে। মাত্র তিন ঘণ্টায় একজন যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট  পৌঁছানোর পর তার পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কলকাতা শহরে পৌঁছাতে পারে।

নোম্যান্সল্যান্ডে এসব গৌরবময় ভাস্কর্য স্থাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিদেশিদের কাছে দেশের সম্মান ও পরিচিতি আরও বাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৭
এজেডএইচ/এনটি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।