জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহ করতে করতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়েন তিনি। কাঠের দাম ও সহজলভ্যতা দু’টোই ছিলো নাগালের বাইরে।
সেই দেখানো পথেই অগ্রসর হলেন তিনি। আজ তার তিনটি চুলা বায়োগ্যাসের মাধ্যমে নিয়মিত জ্বলছে। রান্নাবান্নাসহ ঘর-গৃহস্থালির নানা কাজে প্রয়োজনীয় জ্বালানিটুকু সরবরাহ হচ্ছে। ভিন্নধারার এ বায়োগ্যাস চুলা ব্যবহারকারীর নাম ওয়াহিদ মিয়া।
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের খুশবাস গ্রামে গিয়ে দেখা গেলো ওয়াহিদ মিয়ার বিশাল মুরগি খামারের পাশেই অবস্থিত বায়োগ্যাস প্লান্ট। এটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জ্বালানির এক অনন্য ভাণ্ডার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওয়াহিদ মিয়া বলেন, আমার বাড়িতে এটি ২০১৬ সালের জুলাইয়ে স্থাপিত হয়। খামারের মুরগির বিষ্ঠাগুলো প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমেই গ্যাস তৈরি হয়। এখন আমার দৈনিক ৩টি চুলা জ্বলে। কর্তৃপক্ষ বলেছে বিশ বছর নাকি এটি চলবে।
তিনি আরো বলেন, প্রথম প্রথম প্রতিদিন ৭০০ মুরগির বিষ্ঠা ১৮০ কেজি করে দিয়েছি ২ মাস। এখন সপ্তাহে ১ দিন ১৮০ কেজি করে বিষ্ঠা দেই। গ্যাসের চাপ কমে গেলে ৪/৫ দিন পর পরও দেই। বেশি রান্না হয়ে গ্যাসের প্রেসার কমে যায় তখন বিষ্ঠা বেশি লাগে।
বায়োগ্যাসের কূপ তৈরি সম্পর্কে তিনি বলেন, মাঝখানে ৫ ফুট বাঁশ রেখে ৫ ফুট ঘুরিয়ে কূপ খনন করা হয়। এই কূপের গভীরতা ৭ ফুট। তারপর হ্যান্ডেল, প্লাস্টিক পাইপ, বার্নারসহ আনুষঙ্গিক নানান জিনিসপত্র সরবরাহ করা হয়। এতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
আমাদের গ্রামে গ্যাস দিয়ে রান্না করার কথা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। বেঙ্গল বায়োগ্যাস নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে এ সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান ওয়াহিদ মিয়া।
এলাকাবাসী শেখ মোজাম্মেল হক বলেন, দেশে গ্যাস সংকটের মধ্যে এমন ব্যক্তিগত গ্যাস উৎপাদনের কূপই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। আমারও এমন একটি কূপ করার ইচ্ছে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
বিবিবি/জেডএস