বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে ‘কেমন আছেন আমাদের চা শ্রমিকরা’? তাদের অবস্থার খোঁজ নিয়ে ছবি ধারণ করতে বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে সরেজমিন যেতে হলো ফুলছড়া চা বাগানে।
বাগানের প্রবেশমুখে অবস্থিত এক নম্বর লাইন।
এ আবাসিক এলাকায় পর্যাপ্ত খাবার পানির সংকটের পাশাপাশি চা শ্রমিকদের কর্মস্থলেও সংকট রয়েছে।
চা বাগানে ‘পানিওয়ালা’ (পানি বহনকারী ব্যক্তি) বলে একটি শব্দ বহুপ্রচলিত। এই পানিওয়ালার কাজই হলো কাঁধে পানির ভার বহন করে চা শ্রমিকরা যেখানে কাজ করেন যেখানে পানি পৌঁছে দেয়া এবং কেউ পানি খেতে চাইলে তার হাতেও পানি তুলে দেয়া।
দেখা গেল পানিওয়ালারাও নিশ্চিন্তে এই টিউবওয়েল থেকেই পানি সংগ্রহ করছেন। তারপর সেকশনে উদ্দেশে বয়ে নিয়ে যাবেন।
পানি নিতে আসা প্রতিমা তন্তুবাই বলেন, এ টিউবওয়েলের কোনো অবসর নাই। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে বিরামহীন। এখানে প্রতিদিন প্রায় ৫শ’ মানুষের জন্য পানি নেয়া হয়। এই লাইনে প্রায় একশত ত্রিশটি ঘর রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ পানি দারুণ স্বচ্ছ। আয়রন নেই। আমরা দূরে থেকে এ পানি নিতে আসি দিনে ৩/৪ বার।
মনি বুনার্জী জানান, আমাদের বাগানে মোট ৪টি টিউবওয়েল আছে। প্রায় প্রতিটি লাইনে একটি করে। কিন্তু আরো টিউবওয়েল আমাদের দরকার।
সুনীল কুর্মি বলেন, প্রায় আট বছর থেকে এখানে এটি স্থাপিত। প্রথমে অটোমেটিকভাবে পানি পড়তো। কিছুদিন পরেই এই অটোমেটিকভাবে পানি পড়া বন্ধ হয়ে যায়। তারপর সবাই হাত দিয়ে হ্যান্ডেল চেপে চেপে পানি নেয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক নেতা রামভজন কৈরি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের চা শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ পানি সংক্রান্ত বিষয়ের যথাযথ বাস্তবায়ন চা বাগানগুলোতে হয় না। শুধু চা শ্রমিকদের আবাসিক এলাকাতেই নয়, তাদের কর্মস্থলেও একই সমস্যা বিদ্যমান। আমাদের ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আমরা চা বাগান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বরাবরে এ ব্যাপারে জোর দাবি জানিয়েও আসছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের একজন চা শ্রমিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৭/৮ ঘণ্টা নিদ্রাযাপন করেন। অবশিষ্ট ১৪/১৫ ঘণ্টা তিনি জেগে থাকেন। তারপর ৮/৯ ঘণ্টা তিনি তার কর্মস্থলে থাকেন। তো বেশিভাগ সময় যেখানে তারা কাটান এখানে তো নিরাপদ পানির ব্যবস্থা থাকতেই হবে। আমরা চাই পর্যাপ্ত পানির সরবরাহের জন্য প্রতিটি সেকশনে টিউবওয়েল স্থাপন করতে হবে এবং চা শ্রমিকদের কর্মস্থলে শৌচাগার ও প্রক্ষালনকক্ষও নির্মাণ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
বিবিবি/এসএইচ