শুকিয়ে আসা তিস্তায় এখন এমনিতেই মাছের আকাল। জাল গুটিয়ে অনিশ্চিত সময় কাটাচ্ছে জেলেরা।
বাংলানিউজকে তারা জানায়, হাঁটু পানির তিস্তায় মাছের আকাল পড়ায় তারা পাথর সংগ্রহ করছে। প্রতিদিন এভাবে ৩/৪ ঘণফুট পাথর সংগ্রহ করে প্রতিটি শিশু। এসব পাথর বামতীর বাঁধের কয়েকজন ঠিকাদার ৫০ টাকা ঘণফুট দরে নগদ অর্থেই কিনছেন।
শিশুদের একজন আরিফ। স্থানীয় দোহানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র হলেও জীবিকার তাগিদে পাথর সংগ্রহ করে সে। মাঝে মধ্যে স্কুলে যায়। তার বাবা সাহেদ আলী আগে তিস্তায় মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করতেন। এখন তিস্তায় পানি না থাকায় কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তাতে চলে না তাদের ৫ সদস্যের সংসার।
এ জন্যই তিস্তার এ খালে পাথর সংগ্রহ করে আরিফ। সে বলে, পেটে ভাত না থাকলে স্কুল যাই কেমনে?
পাথর বিক্রি করে দৈনিক আয় হয় দেড় থেকে দু’শ’ টাকা। সে টাকায় মায়ের চিকিৎসা হয় - যোগ করে আরিফ।
শুধু আরিফই নয়, পাথর তুলছে রোহানী, শরিফুল, জালাল, রবিউল, শামছুলসহ অনেকেই। সবার বয়স ৮/১২ বছরের মধ্যে।
রোহানী'র বাবা মোকসেদ আলী আগে তিস্তায় মাছ ধরলেও এখন অসুস্থ হয়ে পড়ায় কাজে অক্ষম হয়ে পড়েছেন বছর দুই হলো। তাই স্কুল আর বই খাতা রেখে বাবার সংসারের হালটা তাকেই ধরতে হয়েছে। সংসারের চাকা সচল রাখতে পাথর আহরণ করছে রোহানী। বর্ষাকালে মাছ ধরলেও এখন পানি শূন্য তিস্তায় অন্য শিশুদের সঙ্গে পাথর তুলছে সে।
এরা সবাই লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের তিস্তা ব্যারাজের জেলে পাড়ার শিশু।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তা পানি শূন্য হওয়ায় মাছ নেই এ নদীতে। তাই জেলে পাড়ার শিশুরা দল বেঁধে এখন পাথর তুলছে তিস্তা ব্যারাজের ভাটির খালে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
জেডএম/