রাতের ঘন অন্ধকার ঠেলে জেগে ওঠা ফুলগুলো যেন কোনো এক ভ্রমরের প্রতীক্ষাতেই থাকে। কখন আসবে ক্ষণিকের অতিথি? কখন স্পর্শে স্পর্শে ছড়িয়ে দেবে প্রস্ফুটিত হবার দারুণ সার্থকতা।
অবশেষে সকালের আমন্ত্রণে আসে কালো ভ্রমর। ‘গুওও, গুওও, গুওও’ অদ্ভুদ শব্দে ধ্বনিত হয় চারদিক। এ ফুল-ও ফুল করে প্রায় প্রতিটি ফুলে মধুর সন্ধানে প্রতীক্ষিত ঠোঁট স্পর্শ করে। চঞ্চল বন্ধুর পরশে প্রতিটি বাগানের প্রতিটি ফুল সম্মিলিতভাবে জেগে ওঠে তখন। প্রকাশের এই সার্থকতা জানান দেয় দৃশ্যমান সৌন্দর্যে।
ঋতুরাজ বসন্ত বড় অপূর্বভাবেই ফুলেদের নানান রঙের পোশাক পড়িয়ে দেয়। কত বাহারি রঙ! কত বৈচিত্র্য রঙের নয়নাভিরাম মুগ্ধতা! প্রকৃতির প্রতিটি গাছগাছালি-লতাগুল্মদের এই বসন্তে তীব্র উচ্ছ্বাস আর পরমানন্দে মাখামাখি হয়ে নীরবে দুলে উঠতে দেখা যায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল খান বাংলানিউজকে বলেন, ভ্রমরের ইংরেজি নাম Bhanvra বা Violet carpenter bee। এরা পরাগায়নের মাধ্যমে ফুলের বংশবিস্তার ঘটিয়ে থাকে। যখন ওরা ফুল থেকে ফুলে ঘুরে বেড়ায় তখন ওদের গায়ে লেগে থাকা রেণুগুলো ফুলে ফুলে লেগে ফুলের পরাগায়ন ঘটায়।
তিনি আরও বলেন, ভ্রমরের ডানাগুলো কিন্তু ঘন নীল রঙের। তবে শরীরে কালো রঙ বেশি থাকায় ওই কালো রঙটাই আমাদের চোখে ফুটে ওঠে। এদের ওড়ার সময় অত্যন্ত দ্রুতগতিতে পাখা ঝাপটানোর অদ্ভুত এক ধরনের শব্দ হয়।
মৌমাছি ও ভ্রমরের পার্থক্য সম্পর্কে তিনি বলেন, মৌমাছি থেকে ভ্রমর আকৃতিগতভাবে অনেক বড়। মৌমাছি যেমন দলবেঁধে চাক তৈরি করে ভ্রমর তা করে না। ভ্রমর কাঠ বা বাঁশের গর্তে এককভাবে বাসা করে থাকে। আর মৌমাছির মতো তারা ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে না। ভ্রমর দু-একটা করে থাকে এবং ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
বিবিবি/এমজেএফ