একেক জাতি একেক রকমের নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে থাকে এতে। আর কিছু কিছু জাতির বিবাহ নীতিতে এমন সব বৈচিত্র্যের দেখা মেলে, যা বিস্মিত করে অন্যদের।
চীনের ইউগুরস ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিয়েতে এক ভয়ানক নিয়ম পালন করতে হয়। বরকে তিনটি ভোঁতা তীর ছুড়তে হয় কনেকে লক্ষ্য করে। এই তীর লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হলে বেশ ব্যথা পেতে হয় কনেকে। এরপর বর ওই তীরগুলো নিয়ে ভেঙে ফেলে, যাতে এগুলো আর কখনও তার স্ত্রীকে আঘাত করতে না পারে।
ভারতের মাঙ্গলিক মনে করা হয় এমন সব মেয়েদের প্রথমে কোনো একটি গাছের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর গাছটি কেটে ফেলা হয়। মনে করা হয় যেসব মেয়েরা মাঙ্গলিক হয়, বিয়ের পর পরই তাদের স্বামীর মৃত্যুর হয়। এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে প্রথমে তাদের গাছের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে তা ধ্বংস করে ফেলা হয়। এবার তার দ্বিতীয়, মানে আসল বিয়েতে আর কোনো বাধাই থাকলো না। ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনও মাঙ্গলিক ছিলেন, আর তার প্রথম বিয়ে গাছের সঙ্গেই হয়েছিল!
চীন ও মঙ্গোলিয়ার এক গোষ্ঠীর বিয়ের তারিখ ঠিক করতে হলে হবু বর-কনেকে মুরগির ছানা মারতে হয়। এরপর ওই মুরগির ছানার কলিজার রং পরীক্ষা করা হয়। কলিজার রং টাটকা হলে বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। নইলে, টাটকা কলিজা না পাওয়া পর্যন্ত মুরগির বাচ্চা মেরে যেতে হবে তাদের।
ইন্দোনেশিয়ার এক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রীতি অনুযায়ী বিয়ের পর নবদম্পতিকে তিন দিন এবং তিন রাত পর্যন্ত ঘরে আটকে রাখা হয়। এই সময়টা নবদম্পতি কোনোভাবেই টয়লেট ব্যবহার করতে পারবে না। এমন নির্দয় কারাদণ্ডের কারণ, এতে দম্পতির ভবিষ্যত সন্তান সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে বলে বিশ্বাস করা হয়।
আপনি যদি ফিজির কোনো বাসিন্দা হন, তবে বিয়ে করতে হয়তো বেশ ঝামেলা হতে পারে। কেননা, ফিজিতে শুধু ওই ব্যক্তিই কন্যার বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে যার হাতে থাকবে একটি তিমির দাঁত। এই দাঁত সংগ্রহ করতে আপনাকে হয় যেতে হবে ব্ল্যাক মার্কেটে, নয়তবা সমুদ্রে। পৃথিবীর বৃহত্তম স্তন্যপায়ী তিমির দাঁত সংগ্রহ করার কাজটা বেশ জটিলই বটে।
যুক্তরাষ্ট্রে যখন দাস প্রথা চালছিল, তখন কৃষ্ণাঙ্গ বর-বধু বিয়ের দিন একটি ঝাড়ুর উপর দিয়ে লাফিয়ে যেতে হতো। এতে বোঝানো হয়, নবদম্পতি একটি নতুন জীবনে প্রবেশ করছে। প্রাচীন এ প্রথাটি এখনও যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণের কিছু অঞ্চলে প্রচলিত।
প্রাচীন স্পার্টা নগরীতে হবু বউয়েরা মাথার চুল কামিয়ে ছেলেদের মতন পোশাক-আশাক পরে তৈরি থাকতো। এর পরের কাজটুকু ছিল মূলত হবু বরের অগ্নি পরীক্ষা। বিয়ের ইচ্ছে থাকলে সবার চক্ষু ফাঁকি দিয়ে এই ছেলে সেজে থাকা তার হবু স্ত্রীকে চুরি করে নিয়ে পালাতে হতো তাকে। তবেই কেবল সে নিজেকে বিয়ের উপযুক্ত বলে প্রমাণ করতে পারতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৭
এনএইচটি/এএ