সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের আলোকচিত্র বিভাগের প্রধান তানভীর মুরাদ তপু, অ্যানথ্রোপলজির শিক্ষক তাসলিমা আখ্তার, আলোকচিত্রী রাহাত এম আহমেদ, নাসিম বানু, কে এম আসাদ ও শুভ্র কান্তি। এদিন প্রদর্শনীতে উপস্থিত হন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
বক্তারা বলেন, নিজ দেশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা পরবাসী হয়েই ছিলেন, কখনো হয়েছেন বলির পাঠা। বাংলাদেশে এদের আগমন এবারই প্রথম নয়। ১৯৭৮ থেকেই রোহিঙ্গাদের আগমন শুরু। এ বছরের আগস্টে আবারো সেনাবাহিনী ও অন্যান্যদের নৃশংস হামলা, ধর্ষণ আর গণহত্যা ঘটে রোহিঙ্গাদের ওপর। প্রাণ বাঁচাতে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে লাখো মানুষ আশ্রয় নেয় বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চল কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে।
পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের ২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ঘটনার পরপরই শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের ছবি তোলেন। পরিকল্পনা করেন পাঠশালার আলোকচিত্রীদের ছবি দিয়ে একটি প্রদর্শনী আয়োজনের। প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে শুরু হয় তাদের গবেষণার কাজ এবং রোহিঙ্গাদের সমস্যা সংকটের প্রশ্নটিকে বোঝার চেষ্টা।
এই বোঝাপড়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া গৃহহারা রোহিঙ্গাদের জীবন সংগ্রামের কিছু চিত্র ও খবর নিয়ে ২৫তম ব্যাচের ভিজুয়্যাল অ্যানথ্রোপলজি কোসের্র শিক্ষার্থীরা আয়োজন করে ‘পরবাসী রোহিঙ্গা’ প্রদর্শনীর।
তাসলিমা আখতারের কিউরেটিংয়ে প্রদর্শনীতে আছে মোট ৩৭টি ছবি। রাহাত এম আহমেদ, অন্বয় অদিত, নাসিম বানু, শাহাদাত হোসাইন বাপ্পির তোলা ছবিও প্রদর্শিত হয়েছে। এছাড়াও প্রদর্শনীতে ছিলো পাঠশালা পরিবারের আলোকচিত্রী আবীর আব্দুল্লাহ, রাহুল তালুকদার, শুভ্র কান্তি দাস, কে এম আসাদ, মনিরুল আলম, শামসুল আলম হেলালের তোলা ছবি ও পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন।
ছবির পাশাপাশি এ আয়োজনে ছিলো নিউ এইজ পত্রিকার সাংবাদিক মেহেদী হক, শহীদ আতিকুল্লাহা ও মার্ফির কার্টুন-ক্যারিক্যাচার ও বিভিন্ন পত্রিকায় রোহিঙ্গাদের আগমন এবং মিয়ানমারে তাদের ওপর নির্যাতনের নানা খবর ও সংবাদ শিরোনামের পেপার কাটিং ও দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয় লেখা নিয়ে বানানো একটি বইয়ের প্রদর্শনী।
ধানমন্ডির পাঠশালা ক্যাম্পাসের দোতালায় বারান্দা জুড়ে প্রদর্শনীর আয়োজন চলে ২ ডিসেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রদর্শনীতে বিশেষভাবে ছিলো রোহিঙ্গাদের পোট্রেট, মিয়ানমার থেকে নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্য ও অতি প্রয়োজনীয় দলিলের ছবি। এছাড়া আছে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ পরিক্রমা, দুর্ভোগ; পাওয়া না পাওয়ার নানা গল্প।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
এমজেএফ