আমার বাড়ি কবিতায় পল্লী কবী জসীম উদ্দীন এর লেখা- ‘শালি ধানের চিঁড়ে দেব/বিন্নি ধানের খই/বাড়ির গাছের কবরী কলা/গামছা-বাঁধা দই। ’ লাইনগুলোও অতিথি আপ্যায়ন বিন্নি ধানের গুরুত্ব তুলে ধরে।
যদিও অন্য জাতের তুলনায় বিন্নি ধানের ফলন কম হয়, তারপরও কৃষকরা অতিথি আপ্যায়নে এই জাতের ধান কম করে হলেও চাষ করে থাকেন।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ৮ উপজেলায়ই এরবার রোপা আমনের মৌসুমে এ ধানের চাষ হয়েছে। গেল বোরো মৌসুমে আগাম বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়াতে মন ভাল নেই কৃষকের। তারপরও এ মৌসুমে শখের বিন্নি ধান চাষ থেকে বিরত থাকেননি তারা। অধিকাংশ কৃষকই অন্যান্য জাতের ধানের পাশাপাশি এ ধান চাষ করেছেন।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শীতকাল এসেছে, মেয়েজামাই তার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসবেন। তাদের আপ্যায়নে বিন্নি চালের ভাত, বোয়াল মাছ আর ঘরের গাভীর দুধ তো দিতেই হবে। তা না হলে আমার মেয়ের মুখ ছোট হয়ে যাবে।
বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্ণপাড়া গ্রামের কৃষক তৌফিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার বড় ভাই পুলিশ অফিসার। তারা শহরে বিন্নি’র চাল সহজে পান না। তাই তাদের জন্য পাঠাতে হবে। ঘরে ধান ওঠানোর কাজ শেষ হলেই, চাল নিয়ে ঢাকায় যেতে হবে। ভাই এবং তার বন্ধুরা শীত মৌসুম এলেই আমাদের বাড়ির বিন্নি চালের অপেক্ষায় থাকে।
জলসুখা গ্রামের কৃষক আশিক মিয়া বাংলাউনিজকে বলেন, আমার বোনের বাড়িতে প্রতি বছরই বিন্নি ধানের চাল পাঠাই। এবারো চাষ করেছি। ধান তোলা শেষ হলেই আমার স্ত্রীকে নিয়ে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাব। সে সময় অনেক কিছু নিয়ে যেতে হবে। এগুলোর মাঝে প্রধান আকর্ষণ হলো বিন্নি ধান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
জেডএম/