ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

সাগর তলের মনস্টার

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
সাগর তলের মনস্টার ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সাগরের তলদেশে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না। চির অন্ধকারের এ রাজ্যে কি ঘটছে বা কারা এতে রাজত্ব করছে তা রয়ে যায় মানুষের নজরের বাইরে। বিজ্ঞানীরা বলেন, সাগর তলের রহস্যময় জগতের বেশিরভাগই এখনও মানুষের অজানা।

সম্প্রতি একজন রাশিয়ান মৎস্য শিকারি রোমান ফেডোর্টসভ সাগরের অন্ধকার তলদেশে রাজত্ব করে বেড়ানো অদ্ভুত প্রাণীদের হাজির করেন দিনের আলোয়। এসব প্রাণীর কয়েকটি ছবি তিনি পোস্ট করেন টুইটারে।

অদ্ভুত প্রাণীগুলোকে না দেখলে হয়তো কারো বিশ্বাস হবে না যে এসব প্রাণী আসলেই আমাদের পৃথিবীতে বসবাস করে।

পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন হাঙর প্রজাতিগুলোর একটি ফ্রিল্ড সার্ক

ভয়ংকর এ প্রাণীটির বসবাস সাগরের ‘টোয়াইলাইট জোনে’। সাগরের মধ্যম স্তরকে বলা হয় টোয়াইলাইট জোন। সমুদ্রপৃষ্ঠের ৬শ থেকে ৩৩শ ফুট পর্যন্ত এ অংশে খুবই ক্ষীণ সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে। প্রাণীটাকে বলা হয় ফ্রিল্ড সার্ক। এর দেহ কিছুটা বানমাছের মতো। এরা পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন হাঙর প্রজাতিগুলোর একটি। ধারণা করা হয় ডায়নোসরদের আমল থেকে আর্কটকের গভীরে এরা রাজত্ব করে আসছে। এদের চোয়ালে দাঁতের সংখ্যা প্রায় তিনশ।

উত্তর রাশিয়ার অধিবাসী রোমান ফেডোর্টসভ আর্কটিক মহাসাগরের দক্ষিণে অবস্থিত ব্যারেন্টস সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর্কটিক মহাসাগর পৃথিবীর অন্যসব মহাসাগরের তুলনায় অগভীর। দীর্ঘদিন এসব অঞ্চলে মাছ ধরার সময় ফেডোর্টসভের জালে ধরা পড়ে এসব অদ্ভুত প্রাণী। তিনি ছবি তুলে রাখেন সেগুলোর।

ছবির বামের প্রাণীটি ‘উলভ্‌ ফিস’ অর্থাৎ নেকড়ে মাছ।  ডানের প্রাণীটিকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বলছেন ‘মৃত্যুর প্রলোভন’।

অজানা জগতের এসব প্রাণীর কারো কারো নাম ফেডোর্টসভ নিজেই দিয়েছেন। ছবির বামের প্রাণীটির নাম তিনি দিয়েছেন ‘উলভ্‌ ফিস’ অর্থাৎ নেকড়ে মাছ। ডানের প্রাণীটির নাম অবশ্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের দেওয়া। এটিকে বলা হচ্ছে ‘মৃত্যুর প্রলোভন’। এর মাথার সম্মুখে প্রসারিত অংশটি শিকারকে প্রলুব্ধ করে। এ প্রলোভনের অল্প পেছনেই অপেক্ষা করছে মরণ দাঁত।

ফেডোর্টসভের সংগ্রহের অদ্ভুত সামুদ্রিক প্রাণী

ফেডোর্টসভ টুইটারে এ প্রাণীটার ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আশা করছি খেতে বসে আপনাকে এই ছবিটা দেখতে হয়নি’। বীভৎস এ প্রাণীকে দেখলে খাওয়ার সময় অরুচি এসে যাওয়া স্বাভাবিক। প্রাণীটার নাম পরিচয় বের করা সম্ভব হয়নি ফেডোর্টসভের পক্ষে।

ইউরোপীয় সামুদ্রিক বোয়াল

চ্যাপ্টা আকৃতির এ মাছটি ইউরোপীয় সামুদ্রিক বোয়ালের একটি প্রজাতি। ত্বকে কমলা রঙের বৃত্তগুলোর কারণে এদের সহজেই চেনা যায়। তবে এরা খুবই বিরল।

ফেডোর্টসভের সংগ্রহের অদ্ভুত সামুদ্রিক প্রাণী

ইন্টারনেটের কেউই এ অদ্ভুত প্রাণীটা সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি। এমন প্রাণী কেউ দেখছে বলে পাওয়া যায় না। কেউ কেউ বলেন এটা জিনাস মলাকোস্টাস (genus Malacosteus) নামে এক জাতীয় গভীর সাগরীয় ড্রাগনফিসের কোনো প্রজাতি হতে পারে।

অদ্ভুত প্রাণীটাকে বলা হচ্ছে, গ্রেনেডিয়ারের কোনো এক প্রজাতি

ফেডোর্টসভের সংগ্রহের আরেকটি কিম্ভূতকিমাকার প্রাণী। অদ্ভুত বড় চোখ, নিচের দিকে নেমে আসা লাল ঠোঁট এবং ইঁদুরের মতো লেজ বিশিষ্ট প্রাণীটাকে বলা হচ্ছে, গ্রেনেডিয়ারের কোনো এক প্রজাতি। এরা আর্কটিক ও আটলান্টিকের তলদেশে বসবাস করে।

গভীর সাগরের মাকড়শা।

এরা গভীর সাগরের মাকড়শা। আর্কটিক মহাসাগর ও অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের সমুদ্রের তলদেশে এদের বসবাস। উজ্জ্বল কমলা রঙের সামুদ্রিক মাকড়শাগুলোর আকৃতি সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।